খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার কায়িনাতে যত মাখলূকাত তিনি সৃষ্টি করেছেন, তন্মধ্যে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, আকরামুল খলায়িক্ব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকেই তিনি শ্রেষ্ঠত্ব ও সর্বাধিক মর্যাদা, মর্তবা, ফযীলত তথা মাক্বামাত হাদিয়া মুবারক করেছেন। এক কথায় তিনি শুধুমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনি নন; এছাড়া আর যত প্রকার ফযীলত, মর্যাদা ও মর্তবা রয়েছে, তা সবই খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক উসীলায় বনী আদমকে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। আর বনী আদমের মধ্যে যার সাথে আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যতবেশি তায়াল্লুক ও মুহব্বত উনাকেই মহান আল্লাহ পাক তিনি ততবেশি ফযীলত, মর্যাদা ও মর্তবা দান করেছেন। সুবহানাল্লাহ!খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কারণেই উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সবচেয়ে বেশি ফযীলত, মর্যাদা ও মর্তবা। কারণ অন্যান্য মানুষের মধ্যে উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সাথেই আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সর্বাধিক তায়াল্লুক বা সম্পর্ক। সুবহানাল্লাহ! স্মরণীয় যে, প্রতিটি মানুষের হাক্বীক্বী মর্যাদা প্রকাশিত হবে জান্নাতে। আর হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা জান্নাতে থাকবেন স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে। সুবহানাল্লাহ! সুতরাং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরে সমস্ত মানুষের মধ্যে সর্বাধিক ফযীলত, মর্যাদা ও মর্তবার অধিকারী হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সর্বাধিক তায়াল্লুক ও মুহব্বত সম্পন্ন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা। সুবহানাল্লাহ! উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের ফযীলত ও লক্বব মুবারক সম্পর্কে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক ফরমান, “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ঈমানদারগণের নিকট তাঁদের প্রাণের চেয়েও অধিক প্রিয়। আর উনার সম্মানিত নিসা অর্থাৎ যাওযাতুল মুকাররমহা আলাইহিন্নাস সালামগণ উনারা মু’মিনগণ উনাদের মাতা।” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৬) আলোচ্য পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যাওযাতুল মুকাররমহা আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে ‘উম্মুল মু’মিনীন’ বা ‘মু’মিন উনাদের মাতা’ লক্বব মুবারক হাদিয়া করেছেন। অর্থাৎ আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যাওযাতুল মুকাররমাহ আলাইহিন্নাস সালামগণ উনারা সমস্ত উম্মতের নিকট নিজের মায়ের মতো। প্রকৃতপক্ষে এক কথায় উনার যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ব্যতীত সমস্ত জিন-ইনসানসহ সমস্ত কায়িনাতের সম্মানিত মাতা। সুবহানাল্লাহ! নিজের মাকে যেমন তা’যীম-তাকরীম বা সম্মান করা ফরয, বরং তা থেকে লক্ষ-কোটিগুণ বেশি সম্মান-ইজ্জত করা প্রত্যেক উম্মতের জন্য ফরয আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা নিসা আলাইহিন্নাস সালাম অর্থাৎ হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে। নিজের মাকে যেরূপ বিয়ে করা হারাম, তেমনি আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা নিসা আলাইহিন্নাস অর্থাৎ হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম সালাম উনাদেরকেও কোনো (পুরুষ) উম্মতের জন্য বিয়ে করা হারাম। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পর উনার যাওযাতুল মুকাররমাহ অর্থাৎ উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে তোমরা বিয়ে করবে না।” (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৩) হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের ফযীলত সম্পর্কে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “হে নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত যাওযাতুল মুকাররমাহ অর্থাৎ উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালামগণ! আপনারা অন্যান্য মহিলাদের মতো নন।” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩২) অর্থাৎ সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেমন দুনিয়ার অন্য কোনো মানুষের মতো নন, তেমনি উনার সম্মানিত যাওযাতুল মুকাররমাহ অর্থাৎ উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালামগণ অর্থাৎ হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারাও দুনিয়ার অন্য কোনো মহিলার মতো নন। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে বেমেছাল পূত-পবিত্রা এবং সুমহান চরিত্র মুবারক উনার অধিকারিণী করে আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য খাছ করে সৃষ্টি করেছেন। সেজন্য উনাদের আরেকটি খাছ লক্বব মুবারক হলো ‘আযওয়াজুম মুত্বাহহারাত’ অর্থাৎ পূত-পবিত্রা আহলিয়াগণ। এ সম্পর্কে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হে (আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার) আহলে বাইত শরীফগণ! মহান আল্লাহ পাক তিনি চান আপনাদের থেকে (সর্বপ্রকার) অপবিত্রতা, অশালীনতা দূর করতে। তিনি আপনাদেরকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্রা করতে চান।” অর্থাৎ আপনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি করেছেন।” (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩) উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার অর্থ এটা নয় যে, সম্মানিত আহলে বাইত বা উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালামগণ উনাদের মধ্যে কোনো প্রকার অপবিত্রতা রয়েছে যা থেকে উনাদেরকে পবিত্র করতে হবে। বরং এর অর্থ হচ্ছে যে, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বয়ং স্বীয় ভাষায় পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে উনাদের পবিত্রতার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছেন। যেমন, আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিসেবে সৃষ্টি হওয়ার পরও উনাকে চল্লিশ বছর বয়স মুবারকে আনুষ্ঠানিকভাবে উনার রিসালত মুবারক অর্থাৎ উনাকে সাইয়্যিদুল মুরসালীন ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! মূলত, কোনো প্রকার অশ্লীল ও অশালীন কাজ তো দূরের কথা, কোনো প্রকার অশোভনীয় ও মুরুওওয়াতের খিলাফ কাজও হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালামগণ উনাদের স্পর্শ করতে পারেনি। সুবহানাল্লাহ! তাই খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র ইরশাদ মুবারক করেন, “হে নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিতা নিসাগণ! আপনাদের মধ্যে কেউ যদি কোনো প্রকার স্পষ্ট শালীনতার খিলাফ কাজে জড়িত হন, তবে উনাকে দ্বিগুণ অসন্তুষ্টি দেয়া হবে। এটা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষে অত্যন্ত সহজ।” (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩০) উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে দ্বিগুণ অসন্তুষ্টির কথা বলা হয়েছে। তার অর্থ হলো উনারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বরকতময় ছোহবত অর্জন ও যাওযাতুল মুকাররমাহ হওয়ার কারণে উনাদের মর্যাদা-মর্তবা অন্যান্যদের তুলনায় সীমাহীন ঊর্ধ্বে। উনারা যে বেমেছাল ফযীলত, মর্যাদা ও মর্তবার অধিকারিণী ছিলেন, তারই দলীল পেশ করেছেন খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে। যেমন হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের ক্ষেত্রে পবিত্র কালাম পাক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের থেকে এই মর্মে ওয়াদা নিলেন যে, আমি আপনাদেরকে কিতাব ও হিকমত দান করবো। অতঃপর আপনাদেরকে প্রদত্ত কিতাবসমূহকে সত্য প্রতিপাদনকারী হিসেবে একজন রসূল, অর্থাৎ যিনি আখিরী রসূল, যিনি আমার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আগমন করবেন। আপনারা উনার প্রতি ঈমান আনবেন এবং উনাকে পেলে খিদমত মুবারক করবেন। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, আপনারা কি আমার এ ওয়াদা স্বীকার ও গ্রহণ করলেন? উনারা বললেন, হ্যাঁ, আমরা স্বীকার করে নিলাম। তখন খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি বললেন, তাহলে আপনারা সাক্ষী থাকুন এবং আমিও আপনাদের সাথে সাক্ষী রইলাম। এরপর যারা এ ওয়াদা থেকে ফিরে যাবেন উনারা কিন্তু নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালাম হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবেন না।” (পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৮১, ৮২) খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ব্যতীত এক লক্ষ চব্বিশ হাজার, মতান্তরে দুই লক্ষ চব্বিশ হাজার নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের থেকে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উক্ত ওয়াদা নিয়েছিলেন। কিন্তু কেউই ওয়াদা থেকে ফিরে যাননি বা ওয়াদা ভঙ্গ করেননি। আর ওয়াদা ভঙ্গ করার প্রশ্নই ওঠে না। কারণ হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ উনারা প্রত্যেকেই খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার প্রদত্ত পবিত্র ওহী মুবারক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং উনারা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি পূর্ণ অনুগত। উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মূল উদ্দেশ্য ছিল কেবল এ কথাটি জানিয়ে দেয়া যে, আপনাদেরকে যেহেতু সবচাইতে শ্রেষ্ঠ ও মহান নিয়ামত অর্থাৎ নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রদান করা হবে, আর তা প্রদান করার শর্ত হিসেবে যে ওয়াদা করা হলো তা পালন না করলে সে নিয়ামত বহাল থাকবে না। আর এটাই স্বাভাবিক এবং বাস্তবসম্মত কথা যে, যাকে যত বড় নিয়ামত দেয়া হবে তিনি যদি সে নিয়ামতের ক্বদর ও শুকরিয়া না করেন, তাহলে সে অনুপাতেই তার বিপরীত অবস্থা হওয়া উচিত। প্রকৃতপক্ষে পবিত্র আয়াত শরীফ উনার উদ্দেশ্য অসন্তুষ্টি প্রকাশ করা নয়। বরং উনারা সর্বদাই খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকে ও উনার হাবীব, আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক উনাকে প্রাধান্য দিতেন এবং তাই তলব করতেন। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “হে নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি আপনার সম্মানিত যাওযাতুল মুকাররমাহ আলাইহিন্নাস সালামগণ উনাদেরকে বলুন; যদি আপনারা পার্থিব জীবন ও দুনিয়াবী সৌন্দর্য কামনা করেন; তবে আসুন, আপনাদেরকে দ্রব্যসামগ্রী ও বিলাসিতার ব্যবস্থা করে দেই এবং আমি আপনাদেরকে উত্তম পন্থায় চলে যাওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করি। আর যদি আপনারা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনাকে ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এবং পরকালীন কল্যাণ কামনা করেন, তবে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাদের সৎকর্ম পরায়ণতার জন্য মহা পুরস্কারের ব্যবস্থা করে রেখেছেন।” (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৮, ২৯) এ পবিত্র আয়াত শরীফ প্রসঙ্গে হযরত উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত আছে। তিনি বলেন, “আমাদের পরিধানের পোশাক পর্যাপ্ত পরিমাণ না হওয়ার কারণে আমাদের ইবাদত-বন্দেগী এবং আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক যথাযথভাবে সম্পাদন করা কষ্টকর হয়ে পড়ার আশঙ্কায় আমরা পোশাক সম্পর্কে জানিয়ে ছিলাম, যাতে আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক যথাযথভাবে সম্পাদন করা সহজ হয়। উল্লেখ্য, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা অনেক দান-খয়রাত করতেন। ফলে উনাদের কাপড় মুবারক অর্থাৎ লেবাছ মুবারকও অনেক সময় সল্প সংখ্যক হয়ে যেতো। ইত্যাদি কারণে উনারা আবদার করেছিলেন। অর্থাৎ খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে প্রকৃতপক্ষে আমাদের পবিত্রতাই ঘোষণা করেন।” অনেকে মনে করে যে, “হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালামগণ উনারা অন্যান্য মহিলাদের মতো আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে দুনিয়াবী সম্পদ তলব করেন।” নাউযুবিল্লাহ! সেই ভ্রান্ত ধারণার মূলোৎপাটনের জন্য খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এ পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিল করে জানিয়ে দিলেন যে, হাক্বীক্বত উনারা দুনিয়া তলব করেননি। বরং হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালামগণ উনারা যে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের জন্য দুনিয়াবী সমস্ত কিছু ত্যাগ করে খালিছভাবে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুবারক সন্তুষ্টি হাছিলে মশগুল ছিলেন, তারই স্পষ্ট বর্ণনা ও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে দান করেন। সুবহানাল্লাহ! উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফসমূহে এবং আরো অনেক পবিত্র আয়াত শরীফসমূহে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সীমাহীন বেমেছাল ফযীলত বর্ণনা করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
- Blogger Comments
- Facebook Comments
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)

0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন