সব প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সব সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত পবিত্র দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “পরবর্তী উম্মতরা যদি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ন্যায় ঈমান আনেন তবে তারা হিদায়েতপ্রাপ্ত হবেন।” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩৭)
প্রসঙ্গত, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরসহ সমস্ত কায়িনাতবাসীর মহাসম্মানিতা উম্মুন বা মাতা হচ্ছেন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
কিন্তু পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত পরবর্তী উম্মত তাদেরও তো মহাসম্মানিত রূহানী মাতা তথা ক্বায়িম মাক্বামে উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র অজুুদ মুবারক থাকার কথা। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে সে মহান মহামহিম, মহামান্যা মুহতারামা মাতা বা উম্মুন আলাইহাস সালাম কে?
বলার অপেক্ষা রাখেনা, পরবর্তী জামানায় অর্থাৎ বর্তমান আখিরী জামানায়- আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল পরিপূর্ণ মেছদাক ও ক্বায়িম-মাক্বাম হচ্ছেন- বর্তমান যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, লক্ষ্যস্থল আওলাদে রসূল, যামানার সুমহান ইমাম ও মুজতাহিদ, সুমহান মুজাদ্দিদে আ’যম, জামিউল আলক্বাব, ছাহিবে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
তিনি বর্তমান যামানায় সবার মহাসম্মানিত রূহানী পিতা আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং যিনি সাইয়্যিদায়ে মঈনে মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনিই যে এ যামানার মু’মীন মুসলমানগণের মহাসম্মানিত রূহানী মাতা তথা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম- তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। তিনিই এ উম্মাহর মাতা তথা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
প্রসঙ্গত, মহামহিমান্বিত সাইয়্যিদুশ শুহূর পবিত্র ৭ই রবীউল আউয়াল শরীফ। সাইয়্যিদাতুন নিসা, যাওজাতু মুজাদ্দিদে আ’যম, আফদ্বালুন নিসা বা’দা হযরত উম্মাহাতিল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, উম্মুল উমাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার সুমহান, মহিমান্বিত, পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস।
উল্লেখ্য, সৃষ্টির অসংখ্য রহস্য মহিমান্বিত ৭ সংখ্যা মুবারকের মাঝে নিহিত। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি ছয়দিনে কায়িনাত সৃষ্টি করেন এবং এর সাথে একদিন বিরতি যুক্ত করেন। অর্থাৎ সৃষ্টি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় ৭ দিনে। সুবহানাল্লাহ! সে সাথে তৈরি করেন ৭ আসমান এবং ৭ তবক যমীন। সুবহানাল্লাহ! এবং গণনা হিসেবে মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে দিনের সংখ্যা ৭। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
অপরদিকে গোটা জিন-ইনসানের মুখে সর্বাধিক পঠিত বিষয় হচ্ছে পবিত্র সূরা ফাতিহা শরীফ।
আর সবচেয়ে ফযীলতযুক্ত, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শেফা ও সিরাতুল মুস্তাক্বিম উনার সমন্বয়ে সমগ্র পবিত্র কুরআন শরীফ উনার নির্যাস, উম্মুল কিতাব, ‘উম্মুল কুরআন’ পবিত্র সূরা ফাতিহা শরীফ উনার পবিত্র আয়াত শরীফ উনার সংখ্যা ৭।
আর উনার গুপ্তভেদস্বরূপ সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার পবিত্রতম বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার তারিখের সংখ্যাও ৭ অর্থাৎ শাহরুল আ’যম, সাইয়্যিদুশ শুহূর, মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ উনার মহিমান্বিত ৭ম দিন। সুবহানাল্লাহ!
অর্থাৎ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ‘উম্মুল উমাম’ আলাইহাস সালাম আর ‘উম্মুল কুরআন’ ‘উম্মুল কিতাব’ পুরোপুরি সমার্থক। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনার অধিকারী। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
মূলত, তিনি শুধু হযরত উম্মুল উমাম নন; তিনি উম্মুল উম্মাহাত। তিনি সব মায়েদেরও মা। সব মা’গণও উনাকে মা ডেকে অন্তরের সব আকুতি ঢালার সুযোগ পান। পরম প্রশান্তি লাভ করেন।
মূলত, হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি সব মুসলমানগণের সত্যিকার মাতা। কারণ সন্তানরা সব সময় জাহেরী মায়ের কথা মনে রাখে না। স্মরণ করে না। ভয় পায় না। কিন্তু কোনো মুসলমান গুনাহর কাজ করতে গেলেই বা গাফলীত করতে গেলেই তার সামনে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় রূহানীভাবে হাজির হন হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম।
তিনি সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তির দিকে রূহানীভাবে কখনো রক্তিম দৃষ্টিতে তাকান, রুহানীভাবে কখনো মৃদু বা কড়া ধমক দেন, কখনো বা রূহানীভাবে কানটা মলে দেন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি তখন ক্ষমা করুন হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম, ক্ষমা করুন হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম বলে গুনাহর কাজ বা গাফলতি ছেড়ে দেয়। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
সঙ্গতকারণেই বলতে হয়, হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি এমন মাতা যিনি সন্তানকে শুধু জাহেরী দয়া-ইহসানই করেন না মূলত তিনি সন্তানদের সব গুনাহর কাজ থেকেও রক্ষা করেন। বদ আক্বীদা থেকে রক্ষা করেন। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে হিদায়েত করেন। বিশেষ করে নারী শিশু থেকে বৃদ্ধা পর্যন্ত তাদেরকে আলাদাভাবে পর্দা থেকে সংসার ধর্ম সব কিছুর পূর্ণাঙ্গ তালীম দিয়ে উম্মাহর অকল্পনীয় কল্যাণ সাধণ করে যাচ্ছেন। সত্যিই উনি বেমেছাল হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
সঙ্গতকারণেই বলতে হয়, হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার সুমহান মুবারক বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উনার তাৎপর্য, গুরুত্ব, মহত্ত্ব, শান-শওকত লিখিবার যেমন কোন ভাষার শুরু এবং শেষ নেই তেমনি পবিত্র বিলাদত শরীফ পালনের ব্যাপকতার, ঘনঘটার, শান-শওকতেরও তথা সমন্বিত আয়োজনেরও কোন পরিশেষ নাই। সবকিছুই এখানে ব্যর্থ। সম্পৃক্ত শুধুই অক্ষমতা প্রকাশ। অনিবার্য এখানে ক্ষমা প্রার্থনা।
মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনার সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক করেন, “(হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি জানিয়ে দিন, আমি তোমাদের নিকট কোনো বিনিময় চাচ্ছি না। আর চাওয়াটাও স্বাভাবিক নয়; তোমাদের পক্ষে দেয়াও কস্মিনকালে সম্ভব নয়। তবে তোমরা যদি ইহকাল ও পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করতে চাও; তাহলে তোমাদের জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে- আমার হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত করা, তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, উনাদের খিদমত মুবারক উনার আনজাম দেয়া।” (পবিত্র সূরা শুরা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৩)
আবারো বলতে হয়, এক্ষেত্রে বর্তমান যামানায় হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মাঝে লক্ষ্যস্থল হলেন, সাইয়্যিদাতুন নিসা, যাওজাতু মুজাদ্দিদে আ’যম, আফদ্বালুন নিসা বা’দা হযরত উম্মাহাতিল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনি।
হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালামগণ উনাদের সমন্বিত নিয়ামত নিবিষ্টভাবে পরিপূর্ণ হয়েছে উনার মাঝে। বিশেষত: বেমেছালভাবে ফুটে উঠেছে উম্মুল মু’মিনীন হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম ও উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনাদের মুবারক ফাযায়িল-ফযীলত, আমল-খিদমত, মুবারক তায়াল্লুক-নিছবত থেকে তা’লীম তরবিয়ত সবকিছু। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
প্রসঙ্গত আরো উল্লেখ্য যে, সাইয়্যিদাতুন নিসা হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনার সুমহান ফায়িয-তাওয়াজ্জুহ লাভের মাধ্যমে অর্থাৎ উনার মুবারক ছোহবত ইখতিয়ারের মাধ্যমে নারী টিজিং, নারী নির্যাতন, পরকীয়া, লিভ টুগেদার, পারিবারিক বন্ধন ভঙ্গ, আত্মহত্যার প্রবণতা, মাদকাসক্তি, খুন থেকে শুরু করে সব ধরনের সামাজিক অবক্ষয় থেকে দেশ জাতি মুক্তি লাভ করবে। কারণ, তাতে সব মায়েরাই রূহানী যোগ্যতা হাছিল করবে। এবং এতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের সন্তানরাও ভাল হয়ে যাবে। সুতরাং বলতে গোটা দেশ-জাতিই শুদ্ধ হয়ে যাবে। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
সঙ্গতকারণেই মুজাদ্দিদে আ’যম, মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে এমন মুবারক ফযীলত হাদিয়া করেছেন যেন উভয়ে উভয়ের প্রতিবিম্ব। প্রতিচ্ছবি। পার্থক্য শুধু একজন মুজাদ্দিদে আ’যম। অপরজন জাওযাতু মুজাদ্দিদে আ’যম। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
প্রসঙ্গত, মনে রাখতে হবে- পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ উনার প্রথমেই মহান আল্লাহ পাক তিনি মুমিন মুসলমানগণের পরিচয় সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক করেন, “যারা অদৃশ্যের উপর বিশ্বাস রাখেন।”
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনারা জাহেরীভাবে হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালামগণ উনাদের খিদমত মুবারকে যেতেন না। কিন্তু বাতিনীভাবে ২৪ ঘণ্টাই উনাদের দিকে রুজু থাকতেন। হুকুম তামীলের জন্য সুতীব্র আকাঙ্খিত থাকতেন। চরম পরম আকুলি-ব্যাকুলি প্রকাশ করতেন। সর্বোচ্চ নিবেদিত থাকতেন। দিক নির্দেশনা পুঙ্খানুপুঙ্খ ও পরিপূর্ণভাবে পালন করতেন।
একইভাবে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ উনাদের অনুকরণে আমরাও যাতে, ইনশাআল্লাহ বর্তমান যামানার হযরত উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম উনার প্রতিও ইনশাআল্লাহ আমাদের সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা, খুলুছিয়ত, মেহনত এবং খিদমতের আঞ্জাম দিয়ে রূহানী যোগ্যতাসম্পন্ন সন্তানে পরিণত হতে পারি- মহামহিম ৭ই শরীফ দিবসে এটাই আমাদের পরম প্রত্যাশা।
মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তিনি মহান মুজাদ্দিদে আ’যম, গাউছুল আ’যম, দস্তগীর, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদাতুন নিসা, যাওজাতু মুজাদ্দিদে আ’যম, আফদ্বালুন নিসা, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার মুবারক উসীলায় আমাদেরকে কবুল করুন। আমীন! আমীন! আমীন!
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন