সব প্রশংসা মুবারক খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য; যিনি সব সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত পবিত্র দুরূদ শরীফ ও সালাম মুবারক।
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “আমি খেলাচ্ছলে এ পৃথিবী সৃষ্টি করেনি।”
আর কোন্ উদ্দেশ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি সৃষ্টি করেছেন তাও অপ্রকাশিত রাখেননি। মহান আল্লাহ পাক জাল্লা শানূহু তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই আমি জিন ও ইনসানকে সৃষ্টি করেছি কেবলমাত্র আমার ইবাদত উনার উদ্দেশ্যে।”
‘ইবাদত’ শব্দের তাফসীরে বলা হয় মা’রিফাত-মুহব্বত উনার কথা।
মূলত, মহান আল্লাহ পাক উনার মা’রিফাত-মুহব্বত হাছিল করতে হলে আমাদেরকে অনিবার্যভাবে নিবিষ্ট ও নিবেদিত হতে তথা ফানা ও বাক্বা হতে হবে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি এবং উনার সম্মানিত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের প্রতি।
প্রসঙ্গত, পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম অনন্তকালের পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার তাজদীদ করেছেন, ধারণ করেছেন, বিচ্ছুরণ ঘটিয়েছেন, কুল-কায়িনাতবাসীকে বিতরণ করেছেন সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
পাশাপাশি তিনি সাইয়্যিদুশ শুহূর, শাহরুল আ’যম, পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার ইলমকেও সমুন্নত, সমৃদ্ধ করেছেন এবং কুল-মাখলুকাতে বিস্তার ঘটিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মহাসম্মানিত বিলাদতী বরকতময় শান ও মহাসম্মানিত পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশের বছর, মাস, তারিখ এবং সময় সম্পর্কে ইরশাদ মুবারক করেন, ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম তিনি পবিত্র ৮ রবীউল আউওয়াল শরীফ পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
প্রসঙ্গত, পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “উনার প্রতি সালাম (রহমত, বরকত ও সাকীনা) যেদিন তিনি আগমন করেন এবং যেদিন তিনি বিছাল শরীফ গ্রহণ করবেন এবং যেদিন তিনি পুনরুত্থিত হবেন।” (পবিত্র সূরা মরিয়ম শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫)
পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, সালাম (রহমত, বরকত ও সাকীনা) আমার প্রতি যেদিন আমি আগমন করেছি, যেদিন বিছাল শরীফ গ্রহণ করবো ও যেদিন পুনরুত্থিত হবো।” (পবিত্র সূরা মরিয়ম শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩)
সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম উনার জুদায়ী মুবারক উনার কারণে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনারা অবিরত ধারায় সম্মানিত নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত করেন।
শুধু তাই নয়, উনার জুদায়ী মুবারক উনার কারণে গাছ-পালা, তরু-লতা, চাঁদ, সূর্য এক কথায় সমস্ত মাখলুকাত কান্না করে, শোক প্রকাশ করে। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং নিজে উনার সম্মানিত লখতে জিগার ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত গোসল মুবারক করান এবং সম্মানিত কাফন মুবারক পরান। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার লখতে জিগার সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত রওযা শরীফ মুবারক খনন করান এবং উনাকে উনার সম্মানিত রওযা শরীফ মুবারক উনার মধ্যে রাখেন।
ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম উনাকে সম্মানিত দুধ মুবারক পান করানোর জন্য সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ সম্মানিতা দুধপানকারিনী রয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মুবারক সৃষ্টির মধ্যে একক ও বেমেছাল। উনার সাথে কারো তুলনা হয় না। কাজেই উনার সাথে নিসবতযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তিত্ব, বস্তু, বিষয় ইত্যাদিই সর্বশ্রেষ্ঠ ও মর্যাদাবান। উনার পবিত্র ক্বদম মুবারক উনার স্পর্শধন্য মাটি মুবারক- পবিত্র কা’বা শরীফ, পবিত্র আরশ আযীম শরীফ, পবিত্র কুরসী মুবারক, পবিত্র লওহ, পবিত্র কলম মুবারক থেকে অধিকতর সম্মানিত ও মর্যাদাবান। সেক্ষেত্রে উনার আখাচ্ছুল খাছ নিসবতযুক্ত, তায়াল্লুকপ্রাপ্ত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুবারক মর্যাদা, মর্তবা, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী, সম্মান কিরূপ হবে- তা সহজেই অনুমেয়।
প্রসঙ্গত আরো উল্লেখ্য যে, আজ সাইয়্যিদুশ শুহূর, শাহরুল আ’যম, পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ উনার ৮ তারিখ। হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্যতম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল হাদী ’আশার মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস।
সাইয়্যিদুল মুজতাহিদীন, ইমামুল আউলিয়া, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল হাদী ’আশার মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ সম্পর্কে খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা, ইমাম রাজবার শরীফ উনার মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, ২৬০ হিজরী সনের সাইয়্যিদুল আসইয়াদ, সাইয়্যিদুশ শুহূর, শাহরুল আ’যম মহাসম্মানিত রবীউল আউওয়াল শরীফ উনার ৮ তারিখ ইয়াওমুল জুমুয়াহ বা জুমুয়াবার পবিত্র বিছালী শান মুবারক করেন। উনাকে বিষ প্রয়োগে শহীদ করা হয়। উনাকে উনার সম্মানিত পিতা ইমামুল ’আশির মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পার্শ্বে সমাহিত করা হয়।
বলাবাহুল্য, এমন অতীব গুরুত্বপূর্ণ, ফযীলতপূর্ণ দিন সম্পর্কে রাষ্ট্রদ্বীন সম্মানিত ইসলাম উনার দেশ- বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয় বা ইসলামিক ফাউন্ডেশন কোনোই আলোকপাত করেনি।
সংবিধানে ‘রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম’ বিধিবদ্ধ থাকলেও সরকার মহিমান্বিত এ বিষয়টি আমলে নেয় না। নাঊযুবিল্লাহ!
এদেশের ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান- উনাদের মাঝে মৌলিক ঈমানী ইলম ও আমলের চেতনা বিস্তার করে না।
সর্বোপরি মহিমান্বিত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম তথা আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস এবং পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ দিবস পালনের প্রতি কোনো পৃষ্ঠপোষকতা করে না। যা যুগপৎভাবে গভীর দুঃখজনক ও চরম সংক্ষুব্ধমূলক।
উল্লেখ্য, সাংবিধানিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষতা গ্রহণের ফলে এখন আর সরকারিভাবে বিশ্বাস করা হয় না (নাঊযুবিল্লাহ!) যে- মহান আল্লাহ পাক তিনিই রিযিক, দৌলত, হায়াত, মৃত্যুর মালিক। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিই সবকিছু বণ্টনের মালিক এবং উনার পবিত্র আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের প্রতি নিসবত তায়াল্লুক, খিদমতের আলোকেই এ বণ্টন হয়। সুবহানাল্লাহ!
অসংখ্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, “হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম তথা আওলাদে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামগণ উনারা যমীনবাসীকে নিরাপত্তা প্রদানকারী তথা সার্বিক ফায়দা বিতরণকারী।” সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
সঙ্গতকারণেই, উম্মাহর জন্য ফরয-ওয়াজিব হচ্ছে- ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল হাদী ’আশার মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মা’রিফত অর্জন করা। উনাদেরকে অকৃত্রিম মুহব্বত করা। তা’যীম-তাকরীম করা। উনাদের শান-মান আলোচনা করা। উনাদের সম্মানার্থে নিজের ইহকালীন, পরকালীন ফায়দার জন্য সর্বোচ্চ আর্থিক আঞ্জাম দেয়া এবং সমূহ হক্ব মুবারক আদায়ের কোশেষ করা।
মূলত, এসব দায়িত্ব ও সচেতনতা তখনই অর্জিত হবে, যখন যথাযথ সম্মানিত ইসলামী মূল্যবোধ জাগরূক থাকবে। কিন্তু তার জন্য প্রয়োজন খাছ রূহানী ফয়েজ-তাওয়াজ্জুহ মুবারক।
যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব।
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। (আমীন)

0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন