সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম উনারা কত জন। এই বিষয়ে অনেক ইখতিলাফ রয়েছে।
কেউ তিন জন বলেছেন, কেউ চার জন বলেছেন। কেউ কেউ এর কম বেশিও বলেছেন। আবার কেউ সাত জনও বলেছেন, যা একটা অবান্তর কথা। তবে অধিকাংশের মত ৩ জন ও ৪ জনের পক্ষে। আমরা এখানে সংক্ষেপে বিভিন্ন মতগুলো তুলে ধরবো।
উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষ যেন বুঝতে সক্ষম হয় যে, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি এই বিষয়ে কি অভূতপূর্ব বেমেছাল ও বিস্ময়কর মহাসম্মানিত তাজদীদ মুবারক করেছেন। এছাড়া আমাদের দ্বিতীয় কোনো উদ্দেশ্য নেই।
কিতাবে যে মতগুলো উল্লেখ রয়েছে সংক্ষেপে সেগুলো হচ্ছে-
الباب الثالث فى عدد أولاده صلى الله عليه وسلم ومواليدهم وما اتفق عليه منهم وما اختلف
جملة ما اتفق عليه ستة: اثنان ذكور: القاسم عليه السلام وابراهيم عليه السلام، واربع بنات زينب عليها السلام ورقية عليها السلام وام كلثوم عليها السلا وفاطمة عليها السلام وكلهن أدركن الاسلام وهاجرن معه صلى الله عليه وسلم واختلف فيما سواهن.
فقيل: لم يولد له صلى الله عليه وسلم سواهم والمشهور خلافه.
قال ابن إسحاق: وكان له الطيب عليه السلام والطاهر عليه السلام أيضا، فيكون على هذا جملتهم أربعة ذكور وأربع إناث.
وقال الزبير بن بكار: وفيما رواه عن الطبراني عنه برجال ثقات كان لرسول الله صلى الله عليه وسلم غير ابراهيمعليه السلام القاسمعليه السلام وعبد الله عليه السلام وهو قول أكثر [ أهل النسب].
وقال الدارقطني: وهو الاثبت وصححه الحافظ عبد الغني المقدسي: ويسمى بالطيب عليه السلام والطاهر عليه السلام لانه ولد بعد النبوة وقيل: الطاهر عليه السلام والطيب عليه السلام غير عبد الله عليه السلام، فيكون على هذا جملتهم خمسة ذكور وقيل: كان له صلى الله عليه وسلم الطيب عليه السلام والمطيب عليه السلام ولدا في بطن، والطاهر عليه السلام والمطهر عليه السلام ولدا في بطن، فيكون على هذا جملتهم أحد عشر.
قال ابن إسحاق: ولد أولاده كلهم غير إبراهيم صلى الله عليه وسلم قبل الاسلام، ومات البنون قبل الاسلام وهم يرضعون، وتقدم في قول غيره ان عبد الله عليه السلام ولد بعد النبوة، فلذلك سمي بالطيب عليه السلام والطاهر عليه السلام، فتحصل لنا من مجموع الاقوال سبعة ذكور اثنان متفق عليهما القاسم عليه السلام وإبراهيم عليه السلام وخمسة مختلف فيهم عبد الله عليه السلام والطيب عليه السلام والمطيب عليه السلام والطاهر عليه السلام والمطهر عليه السلام، والاصح قول الجمهور أنهم ثلاثة ذكور القاسم عليه السلام وعبد الله عليه السلام وإبراهيم عليه السلام الاربع البنات
অর্থ: “তৃতীয় অধ্যায়- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সংখ্যা, উনাদের মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ এবং এই বিষয়ে ঐকমত্য ও ইখতিলাফ:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনারা মোট ৬ জন।
এই বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দুই জন আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালামÑ হযরত ক্বাসিম আলাইহিস সালাম তিনি এবং হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম।
আর চার জন বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম। উনারা হচ্ছেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত রুক্বইয়্যাহ আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম আলাইহাস সালাম এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফাত্বিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম।
বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম উনারা প্রত্যেকেই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম পেয়েছেন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্মানিত হিজরত মুবারক করেছেন। এছাড়া অন্যদের ব্যাপারে ইখতিলাফ রয়েছে।
অতঃপর কেউ কেউ বলেছেন, উনারা ব্যতীত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আর কোনো আওলাদ আলাইহিস সালাম মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেননি। যা প্রসিদ্ধ মতের খিলাফ।
ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আরো দুই জন মহাসম্মানিত আবনা (ছেলে) আলাইহিমাস সালাম উনারা ছিলেন। উনারা হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বইয়িব আলাইহিস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বাহির আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
অতঃপর এই মতের ভিত্তিতে মোট যা দাঁড়ায় ৪ জন মহাসম্মানিত হযরত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম এবং ৪ জন মহাসম্মানিত বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম।
আর হযরত যুবাইর ইবনে বাক্কার রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, যা ইমাম ত্ববারনী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিক্বাহ রাবী উনাদের মাধ্যমে বর্ণনা করেছেন যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি ব্যতীত আরো দুই জন মহাসম্মানিত হযরত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমাস সালাম উনারা ছিলেন।
উনারা হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বাসিম আলাইহিস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি। আর অধিকাংশ নসববীদ উনাদের এটাই অভিমত।
আর হযরত ইমাম দারাকুত্বনী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, এটাই সর্বাধিক বিশুদ্ধঅভিমত এবং হযরত হাফিয আব্দুল গণী মুক্বদ্দিসী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি এই অভিমতটিকে ছহীহ বলেছেন। আর সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে ত্বইয়িব এবং ত্বাহির এই দুই নাম মুবারক-এ ডাকা হতো। কেননা তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক প্রকাশ পাওয়ার পরে মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন।
আবার কেউ কেউ বলেছেন, সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি ব্যতীতই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বইয়িব আলাইহিস সালাম এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বাহির আলাইহিস সালাম নামে আরো দুই জন মহাসম্মানিত হযরত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমাস সালাম ছিলেন।
আর এই মতের ভিত্তিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম উনাদের সংখ্যা দাঁড়ায় সর্বমোট ৫ জন।
আবার কেউ কেউ বলেছেন, হযরত ত্বইয়িব আলাইহিস সালাম ও হযরত মুত্বইয়্যাব আলাইহিস সালাম নামে দুই জন মহাসম্মানিত হযরত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমাস সালাম উনারা একই সাথে (জমজ) মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। অনুরূপভাবে হযরত ত্বাহির আলাইহিস সালাম ও হযরত মুত্বহহার আলাইহিস সালাম নামে দুই জন মহাসম্মানিত হযরত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমাস সালাম উনারাও একই সাথে (জমজ) বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। (যা একেবারে অবান্তর কথা) আর এই মতের ভিত্তিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সংখ্যা দাঁড়ায় সর্বমোট ১১ জন। অর্থাৎ ৭ জন আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম এবং ৪ জন বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম।
হযরত ইবনে ইসহাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি ব্যতীত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অন্য সকল মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনারা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রকাশের পূর্বে মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন এবং মহাসম্মানিত হযরত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম উনারা প্রত্যেকেই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রকাশের পূর্বে দুধ মুবারক পানরত অবস্থায় মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন।
আর এই কথা পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে যে, সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক প্রকাশের পর মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। এই জন্য উনার সম্মানিত নাম মুবারক রাখা হয়েছিলো ত্বইয়িব আলাইহিস সালাম ও হযরত ত্বাহির আলাইহিস সালাম।
অতএব, বিভিন্নমত থেকে আমাদের কাছে যা সুস্পষ্ট হলো, মহাসম্মানিত হযরত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম উনারা ৭ জন। দুই জনের ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। উনারা হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বাসিম আলাইহিস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি।
আর ৫ জন উনাদের ব্যাপারে ইখতিলাফ রয়েছে। উনারা হচ্ছেন ১. হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম ২. হযরত ত্বইয়িব আলাইহিস সালাম, ৩. হযরত মুত্বইয়্যাব আলাইহিস সালাম, ৪. হযরত ত্বাহির আলাইহিস সালাম, ৫. হযরত মুত্বহহার আলাইহিস সালাম।
আর বিশুদ্ধ মত হচ্ছে জুমহূর উনাদের অভিমত যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আবনা’ আলাইহিমুস সালাম উনারা ৩ জন- সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বাসিম আলাইহিস সালাম, সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ আলাইহিস সালাম এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম। আর মহাসম্মানিতা হযরত বানাত আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন ৪ জন--সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত রুক্বইয়্যাহ আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম আলাইহাস সালাম এবং সাইয়্যিদাতুনা ফাত্বিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম।” {ইমাম হযরত মুহম্মদ ইবনে ইঊসুফ ছালিহী শামী রহমতুল্লাহি আলাইহি (ওফাত ৯৪২ হিজরী) উনার লিখিত সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ফী সীরাতি খইরিল ইবাদ শরীফ ১১/১৬}
অনুরূপ বর্ণনা হযরত আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার লিখিত বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘মাদারেজুন নুবুওয়াত শরীফ’ উনার মধ্যেও উল্লেখ রয়েছে।
আর হযরত ইমাম ইবনে আছীর রহমাতুল্লাহি আলাইহি (বিছাল শরীফ: ৬০৬ হিজরী) তিনি বলেন,
قد اختلف العلماء في عدد أولاد النبيِّ صلى الله عليه وسلم من الذكور دون الإناث فقال المكثرون إنهم كانوا ثمانية أربعة ذكور وأربع إناث وقال المقلُّون إنَّ الإناث أربع وأما الذكور فثلاثة.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম উনারা কত জন। এই বিষয়ে হযরত উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মাঝে ইখতিলাফ রয়েছে।
তবে মহাসম্মানিতা হযরত বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের নিয়ে কোনো ইখতিলাফ নেই।
অতঃপর অধিকাংশ উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের অভিমত হচ্ছে ৮ জন উনাদের মধ্যে মহাসম্মানিত হযরত আবনা আলাইহিমুস সালাম উনারা ৪ জন এবং মহাসম্মানিতা হযরত বানাত আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ৪ জন।
আর কমসংখ্যক উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের অভিমত হচ্ছে মহাসম্মানিত হযরত আবনা আলাইহিমুস সালাম উনারা ৩ জন এবং মহাসম্মানিতা হযরত বানাত আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ৪ জন।” (জামি‘উল উছূল)
‘ফিক্বহুল আকবর’-এর ইবারতের বরাত দিয়ে অনেকেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম উনাদের সংখ্যা ৩ জন প্রমাণ করার ব্যর্থ প্রয়াস চালিয়েছেন।
আবার অধিকাংশ তাফসীর বিশারদগণ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম উনাদের সংখ্যা ৪ জন বলে উল্লেখ করেছেন।
যেমন হযরত আল্লামা ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ ‘তাফসীরে ইবনে কাছীর শরীফ’ উনার মধ্যে সম্মানিত সূরা আহযাব শরীফ উনার ৪০ নম্বর সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে উল্লেখ করেন,
فَإِنَّه وُلِدَ لَه حَضْرَتْ الْقَاسِمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَحَضْرَتْ الطَّيِّبُ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَحَضْرَتْ الطَّاهِرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ مِنْ حَضْرَتْ خَدِيجَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ فَمَاتُوا صِغَارًا وَّوُلِدَ لَه حَضْرَتْ إِبْرَاهِيمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ مِنْ حَضْرَتْ مَارِيَةَ الْقِبْطِيَّةِ عَلَيْهَا السَّلَامُ فَمَاتَ أَيْضًا رَضِيعًا.
অর্থ: “নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার (৩ জন) মহাসম্মানিত হযরত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বাসিম আলাইহিস সালাম তিনি, সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বইয়িব আলাইহিস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বাহির আলাইহিস সালাম উনারা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন এবং শৈশবকালেই মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। আর সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম তিনি উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত মারিইয়াহ ক্বিবত্বিইয়্যাহ আলাইহাস সালাম উনার মাধ্যমে মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। তিনিও সম্মানিত দুধ মুবারক পানরত অবস্থায় মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন।” (তাফসীরে ইবনে কাছীর শরীফ ৬/৪২৮)
তবে মূল কথা হলো- অধিকাংশ ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের মতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আবনা’ আলাইহিমুস সালাম উনারা ৩ জন অথবা ৪ জন। তবে উনারা কেউ উনাদের মতের সপক্ষে সুস্পষ্ট, অকাট্য কোনো দলীল পেশ করেননি এবং দলীলভিত্তিক ব্যাপক কোনো আলোচনাও করেননি। শুধু উনাদের সম্মানিত নাম মুবারক বলে ইতি টেনেছেন। আর উনাদের মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ সম্পর্কে তো কোনো আলোচনাই করেননি।
মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উনার বছর, মাস, দিন, তারিখ, সময় উল্লেখ করার তো প্রশ্নই উঠে না; এমনকি মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ উনার বছর, মাস, দিন, তারিখ, সময়ও উল্লেখ করেননি।
(তবে সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম উনার বিষয়ে কিছুটা আলোকপাত রয়েছে।) যার কারণে শত শত বছর ধরে এই ইখতিলাফ চলে আসছে।
বর্তমানে যারা রয়েছে তাদের অধিকাংশ জনের মত ৩ জনের পক্ষে।
মূল কথা হলো, এরূপ অনেক ইখতিলাফ রয়েছে। বিভিন্ন কারণে সব ইখতিলাফ এখানে তুলে ধরা অসম্ভব।
আর এই সকল ইখতিলাফের কারণে বুঝে উঠা মুশকিল যে, প্রকৃতপক্ষে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম উনারা কত জন। না‘ঊযুবিল্লাহ!
ফলশ্রুতিতে মুসলমানরা শত শত বছর যাবৎ এক বিশাল মহাসম্মানিত নিয়ামত মুবারক থেকে মাহরূম হয়ে আসছিলো। না‘ঊযুবিল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের অসংখ্য-অগণিত শুকরিয়া যে, উনারা অত্যন্ত দয়া ও ইহসান মুবারক করে যিনি সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনাকে আমাদের মাঝে প্রেরণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের আখাচ্ছুল খাছ সম্মানিত তায়াল্লুক্ব-নিসবত মুবারক উনার মাধ্যমে এবং উনাদের সম্মানিত ইরাদা বা ইচ্ছা মুবারক অনুযায়ী এই বিষয়ে সর্বোত্তম ফায়ছালা মুবারক দিয়েছেন তথা এক অভূতপূর্ব বেমেছাল ও বিস্ময়কর মহাসম্মানিত তাজদীদ মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম উনারা ছিলেন সর্বমোট ৪ জন এবং তিনি উনার সম্মানিত মত মুবারক উনার পক্ষে অত্যন্ত সুস্পষ্ট ও অকাট্য প্রমাণ মুবারকও পেশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম সম্মানিত রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি মহাসম্মানিত হযরত আবনা’ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ ও মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের বছর, মাস, দিন, তারিখ, সময় এবং উনারা কত দিন দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেছেন তা উল্লেখ করে এবং উনাদের সম্মানিত ছূরত মুবারক বর্ণনা মুবারক করে বিষয়টি সুস্পষ্ট করে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ!
সত্যিই তা এক অভূতপূর্ব বেমেছাল ও বিস্ময়কর মহাসম্মানিত তাজদীদ মুবারক। যা সর্বযুগের সমস্ত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদেরকে বিস্ময়াভিভূত করে তুলেছেন। এভাবে এই বিষয়টি কেউ কখনো চিন্তাও করেননি। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হযরত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম উনারা মোট ৮ জন। উনাদের মধ্যে মহাসম্মানিত হযরত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম উনারা ৪ জন এবং মহাসম্মানিতা হযরত বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ৪ জন। এই হলেন মোট ৮ জন। উনারা হচ্ছেন,
১. ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বাসিম আলাইহিস সালাম:
আমরা উনাকে ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম বলে থাকি। সুবহানাল্লাহ! তিনি সম্মানিত ২রা রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুছ ছুলাছা’ শরীফ সকালে মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন সাড়ে ২৭ বছর। তিনি দুনিয়ার যমীনে ২২মাস সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। অতঃপর সম্মানিত ২রা রজবুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ ভোর রাতে মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক প্রায় ২৯ বছর ৪ মাস। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যে তিনিই সর্বাধিক সময় দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
২. বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব আলাইহাস সালাম:
আমরা উনাকে বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম বলে থাকি। সুবহানাল্লাহ! তিনি ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার পর আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত মুবারক প্রকাশের প্রায় ১১ বছর পূর্বে সম্মানিত ২১শে জুমাদাল উখরা শরীফ ইয়াওমুল জুমুয়াহ শরীফ বা’দ ফজর মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ২৯ বৎসর পার হয়ে ৩০ বৎসর চলতে ছিলেন। আর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৪৪ বছর। সুবহানাল্লাহ! তিনি ৮ম হিজরী সনের সম্মানিত ৮ই মুহাররমুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ ইশরাকের ওয়াক্তে সম্মানিত মদীনা শরীফ-এ মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ৩০ বছর ৬ মাস ১৭ দিন দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যে তিনিই সর্বাধিক সময় দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
৩. ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বইয়্যিব আলাইহিস সালাম:
আমরা উনাকে ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম বলে থাকি। সুবহানাল্লাহ! তিনি সম্মানিত ২রা রবী‘উল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল খমীস শরীফ মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে মাত্র ৭ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। অতঃপর ৮ই রবীউল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল আরবিয়া’ শরীফ বা’দ আছর মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ৩১ বছর। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে কম সময় দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
৪. ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বাহির আলাইহিস সালাম:
আমরা উনাকে ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম বলে থাকি। সুবহানাল্লাহ! তিনি সম্মানিত ৪ঠা রবী‘উল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল আরবিয়া’ শরীফ সকালে মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে মাত্র ৮ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। অতঃপর তিনি সম্মানিত ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ ইয়াওমুল খমীস শরীফ চাশতের সময় মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক প্রায় ৩২ বছর। সুবহানাল্লাহ!
৫. বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত রুক্বইয়্যাহ আলাইহাস সালাম:
আমরা উনাকে বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম বলে থাকি। সুবহানাল্লাহ! তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশ পাওয়ার প্রায় ৭ বছর পূর্বে সম্মানিত ৩রা রবী‘উছ ছানী শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ সকালে মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করে সমস্ত কায়িনাতবাসীকে ধন্য করেন। সুবহনাল্লাহ! দুনিয়াবী দৃষ্টিতে তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৩৩ বছর। আর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৪৮ বছর। তিনি ২য় হিজরী সনের ১৮ই রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুস সাব্ত শরীফ শেষ রাত্রে মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ২১ বছর ৫ মাস ১৫ দিন দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ২১ বছর ৫ মাস ১৫ দিন। সুবহানাল্লাহ!
৬. বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম আলাইহাস সালাম:
আমরা উনাকে বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম বলে থাকি। সুবহানাল্লাহ! তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ৫ বছর পূর্বে সম্মানিত ১১ই জুমাদাল ঊলা শরীফ লাইলাতুস সাবত শরীফ মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন প্রায় ৩৫ বছর। আর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৫০ বছর। সুবহানাল্লাহ! তিনি ৯ম হিজরী সনের ৬ই রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা’দ ফজর মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ২৬ বছর ৩ মাস ২৫ দিন দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
৭. বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফাত্বিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম:
আমরা উনাকে বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রাবি‘য়াহ আলাইহাস সালাম বলে থাকি। সুবহানাল্লাহ! তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ৩ বছর পূর্বে ২০শে জুমাদাল উখরা শরীফ ইয়াওমুল জুমুয়াহ শরীফ সুবহে ছাদিক্ব উনার সময় মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি সম্মানিত ১১ হিজরী সনের সম্মানিত ৩রা রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা’দ আছর মহাসম্মানিত রবকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ২৬ বছর ২ মাস ১৩ দিন দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
৮. ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম:
আমরা উনাকে ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রাবি’ আলাইহিস সালাম বলে থাকি। তিনি ৮ম হিজরী সনের সম্মানিত ২রা যিলহজ্জ শরীফ লাইলাতুল জুমুয়াাহ তথা জুমুয়াবার রাতে দুনিয়ার যমীনে মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৬১ বছর। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে ১৫ মাস ৮ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর তিনি ১০ম হিজরী সনের সাইয়্যিদুশ শুহূর মহাসম্মানিত রবীউল আউওয়াল শরীফ উনার সম্মানিত ১০ তারিখ ইয়াওমুছ ছুলাছা শরীফ মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
উনাদের সম্মানিত ছূরত মুবারক:
এই প্রসঙ্গে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মহাসম্মানিত হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের এবং মহাসম্মানিত হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যে ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুল আউওয়াল আলাইহিস সালাম উনার এবং বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের দু’জনের সম্মানিত মুশাবাহাহ (সাদৃশ্যতা) মুবারক ছিলেন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সাথে।
সুবহানাল্লাহ!
আর ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রাবি’ আলাইহিস সালাম উনার এবং বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের দু’জনের সম্মানিত মুশাবাহাহ (সাদৃশ্যতা) মুবারক ছিলেন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ¦াতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে। সুবহানাল্লাহ! আর ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছানী আলাইহিস সালাম উনার, ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম উনার, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার এবং বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের চারজনের সম্মানিত মুশাবাহাহ (সাদৃশ্যতা) মুবারক ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের সাথে।” সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি উনার এই অভূতপূর্ব বেমেছাল ও বিস্ময়কর মহাসম্মানিত তাজীদদ মুবারক দ্বারা শত শত বছর ধরে জমে থাকা সমস্ত ইখতিলাফ মিটিয়ে দিয়েছেন এবং তিনি অত্যন্ত সুস্পষ্ট ও অকাট্যভাবে প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, প্রকৃতপক্ষে মহাসম্মানিত হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা হচ্ছেন ৪ জন। সুবহানাল্লাহ!
এ ব্যাপারে বিন্দুমাত্র সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। সুবহানাল্লাহ!
উনার এই মহাসম্মানিত তাজদীদ মুবারক অনন্তকাল জারি থাকবেন। ক্বিয়ামত পর্যন্ত আর কেউ এই বিষয়ে কোনো চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করতে পারবে না, টু শব্দ করতে পারবে না। সুবহানাল্লাহ!
আমরা এই কথা চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি যে, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি যেভাবে মহাসম্মানিত হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মহাসম্মানিত বরকতময় বিলদতী শান মুবারক প্রকাশ করার এবং মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার বছর, মাস, তারিখ, সময় উল্লেখ করেছেন এবং উনাদের সম্মানিত ছূরত মুবারক বর্ণনা করেছেন, পৃথিবীর কোনো কিতাবে কেউই তা উল্লেখ করেননি। পৃথিবীর কেউ কখনো কোন কিতাবে তা দেখাতেও পারবে না। সুবহানাল্লাহ!
মূলত, এটা হচ্ছে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার একখানা একক মহাসম্মানিত আখাচ্ছুল খাছ খুছূছিয়াত বা বৈশিষ্ট্য মুবারক। যা উনার বেমেছাল শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
এই অভূতপূর্ব বেমেছাল ও বিস্ময়কর মহাসম্মানিত তাজীদদ মুবারক উনার মাধ্যমেই প্রতিভাত হয় যে, মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার কত বেমেছাল আখাচ্ছুল খাছ তায়াল্লুক-নিসবত মুবারক যে, তিনি প্রায় দেড় হাজার বছর পর সম্মানিত তাশরীফ মুবারক এনে মহাসম্মানিত হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মহাসম্মানিত বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার এবং মহাসম্মানিত বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার বছর, মাস, তারিখ, সময় উল্লেখ করলেন।
শুধু তাই নয়, উনাদের সম্মানিত ছূরত মুবারকও অত্যন্ত বেমেছালভাবে বর্ণনা করলেন। সুবহানাল্লাহ!
অথচ এর আগে এই বিষয়ে কেউ কোনো সুস্পষ্ট ও অকাট্য ফায়ছালা দিতেই সক্ষম হননি যে, প্রকৃতপক্ষে মহাসম্মানিত হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা কত জন।
বরং সকলে ইখতিলাফের মহাসমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন। আর সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী এক আখাচ্ছুল খাছ সর্বশ্রেষ্ঠ ও বিশেষ নি’য়ামত মুবারক থেকে মাহরূম হয়ে আসছিলো। না‘ঊযুবিল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি এই সমস্ত ইখতিলাফকে মিটিয়ে দিয়ে সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীকে এক আখাচ্ছুল খাছ সর্বশ্রেষ্ঠ ও বিশেষ নি’য়ামত মুবারক দানে ধন্য করলেন। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার কত বেমেছাল আখাচ্ছুল খাছ তায়াল্লুক-নিসবত মুবারক, সেটা কি কেউ কখনো চিন্তা-কল্পনা করে মিলাতে পারবে?
কস্মিনকালেও নয়। সুবহানাল্লাহ!
মূলত, মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সাথে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার যে বেমেছাল আখাচ্ছুল খাছ তায়াল্লুক-নিসবত মুবারক তা সর্বকালের সর্বযুগের সমস্ত ইমাম-মুজতাহিদ, সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার কোটি-কোটিগুণ উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক এক কথায় আমরা এতটুকুই বলতে পারি যে, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একক ও অদ্বিতীয় হাক্বীক্বী ক্বায়িম মাক্বাম, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আখাচ্ছুল খাছ মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের অন্তর্ভুক্ত। সুবহানাল্লাহ!
তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারী। সুবহানাল্লাহ! তিনি সৃষ্টির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সমস্ত ইলম মুবারক উনার অধিকারী এবং উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক ইতঃপূর্বে যত মুজাদ্দিদ, ইমাম, মুজতাহিদ, আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা এসেছেন এবং ক্বিয়ামত পর্যন্ত যাঁরা আসবেন উনাদের প্রত্যেকের চেয়ে কোটি কোটি গুণ উপরে। সুবহানাল্লাহ!
কত উপরে সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ! সুবহানাল্লাহ!
তাই আমাদের জন্য ফরয হচ্ছে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া, উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করা এবং উনাকে পেয়ে শুকরিয়া আদায় করে হাক্বীক্বীভাবে ‘ফালইয়াফরহূ’ তথা মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে অনুসরণ করে উনার জন্য সমস্ত কিছু কুরবান করে দেয়া। তবেই আমরা হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করতে পারবো। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার সম্মানার্থে আমাদের সবাইকে কবূল করুন। আমীন!

0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন