মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
اِنَّا اَعْطَيْنٰكَ الْكَوْثَرَ
অর্থ: “নিশ্চয়ই আমি আপনাকে সম্মানিত কাউছার মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছি।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা কাওছার শরীফ: সম্মানিত আয়াত শরীফ ১)
এই সম্মানিত কাওছার মুবারক উনার লক্ষ-কোটি ব্যাখ্যা মুবারক। উনাদের মধ্যে একখানা ব্যাখ্যা মুবারক হচ্ছেন, ‘খইরে কাছীর’ তথা সমস্ত প্রকার ভালাই। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সমস্ত প্রকার ভালাই তথা সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ বিষয় মুবারকগুলো হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! অপরদিকে উনার সাথে যে বিষয় মুবারকগুলো সম্পৃক্ত হয়েছেন, সে বিষয় মুবারকগুলো সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ হয়ে গেছেন। সুবহানাল্লাহ!
যার কারণে এই ব্যাপারে সমস্ত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা ইজমা করেছেন যে,
اِنَّ التُّرْبَةَ الَّتِىْ اِتَّصَلَتْ اِلـٰى اَعْظُمِ النَّبِـىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَفْضَلُ مِنَ الْاَرْضِ وَالسَّمَاءِ حَتَّى الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ.
অর্থ: “নিশ্চয়ই এক মুহূর্তের তরেও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত জিসম মুবারক উনার স্পর্শ মুবারক-এ এসেছেন, যেই মাটি, ধূলি-বালি (পদার্থ-বস্তু যা কিছুই হোক না কেন) উনাদের ফযীলত, মর্যাদা-মর্তবা আসমান-যমীন; এমনকি মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক থেকেও লক্ষ-কোটিগুণ বেশি।” সুবহানাল্লাহ!
অন্য ইজমা মুবারক-এ বলা হয়েছে,
فَاِنَّهٗ اَفْضَلُ مُطْلَقًا مِّنَ الْكَعْبَةِ وَالْـكُـرْسِىِّحَتَّى الْعَرْشِ الْعَظِيْمِ.
অর্থ: “নিশ্চয়ই নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার স্পর্শ মুবারক-এ যা কিছু এসেছেন তা অবশ্যই সম্মানিত কা’বা শরীফ, সম্মানিত কুরসী শরীফ; এমনকি মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক থেকেও লক্ষ-কোটিগুণ বেশি ফযীলতপ্রাপ্ত, সম্মানিত এবং সর্বশ্রেষ্ঠ।” সুবহানাল্লাহ!
অর্থাৎ এক মুহূর্তের তরেও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার স্পর্শ মুবারক-এ যা কিছু এসেছেন তা আসমান-যমীন, সম্মানিত কা’বা শরীফ, সম্মানিত কুরসী শরীফ, মহান আল্লাহ পাক উনার কায়িনাতে যা কিছু রয়েছে; এমনকি সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক থেকেও লক্ষ-কোটিগুণ বেশি পবিত্র, ফযীলতপ্রাপ্ত, সম্মানিত এবং সর্বশ্রেষ্ঠ।’ সুবহানাল্লাহ!
সেই বিষয়টি সম্মানিত মি’রাজ শরীফ উনার রজনীতে স্পষ্ট হয়ে গেছে। যেটা সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
اِنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا اُسْرِىَ بِهٖ لَيْلَةَ الْمِعْرَاجِ اِلَى السَّمٰوَاتِ الْعُلـٰى وَوَصَلَ اِلَى الْعَرْشِ الْمُعَلّٰى اَرَادَ خَلْعَ نَعْلَيْهِ اَخْذًا مِّـنْ قَوْلِهٖ تَعَالـٰى لِسَيِّدِنَا حَضْرَتْ مُوسٰى عَلَيْهِ السَّلَامُ حِيْنَ كَلَّمَهٗ فَاخْلَعْ نَعْلَيْكَ اِنَّكَ بِالْوَادِ الْمُقَدَّسِ طُوًى. فَنُوْدِىَ مِنَ الْعَـلِـىِّ الْاَعْلـٰى يَا حَضْرَتْ مُـحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا تَـخْلَعْ نَعْلَيْكَ فَاِنَّ الْعَرْشَ يَتَشَرَّفُ بِقُدُوْمِكَ مُتَنَعِّـلًا وَّيَفْتَخِرُ عَلـٰى غَيْرِهٖ مُتَـبَـرِّكًـا فَصَعِدَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِلَى الْعَرْشِ وَفِىْ قَدَمَيْهِ النَّعْلَانِ وَحَصَلَ لَهٗ بِذٰلِكَ عِزٌّ وَّشَأْنٌ.
অর্থ: “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত মি’রাজ শরীফ উনার রাতে সুউচ্চ সপ্ত আসমান অতিক্রম করে সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক উনার নিকটবর্তী হলেন, তখন তিনি উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলে সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক নেয়ার চিন্তা মুবারক করলেন। মহান আল্লাহ পাক উনার ওই বাণী মুবারক ফিকির করে, যেটা মহান আল্লাহ পাক তিনি (যখন সাইয়্যিদুনা হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি তূর পাহাড়ে মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কথা বলার জন্য তাশরীফ মুবারক রাখবেন, তখন) হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেছিলেন,
فَاخْلَعْ نَعْلَيْكَ اِنَّكَ بِالْوَادِ الْمُقَدَّسِ طُوًى.
আপনি আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ মুবারক খুলুন। কেননা আপনি সম্মানিত (তূর পাহাড়ের) পবিত্র তুয়া উপত্যকায় তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করতে যাচ্ছেন। (সেখানে আমার সম্মানিত আরশে আযীম উনার ৭০ হাজার ভাগের এক ভাগ সম্মানিত নূর মুবারক পতিত হয়েছে। যার কারণে সেই স্থানটি সম্মানিত ও পবিত্র হয়ে গেছে। সুবহানাল্লাহ! তাই আপনি সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলে আসুন।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এই বিষয়টি ফিকির করে উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলার চিন্তা করেছিলেন।) তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি ওহী মুবারক করলেন, হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! দয়া করে আপনি আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলবেন না। অর্থাৎ আপনি আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফসহ আমার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করুন। কেননা আমার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনার পরশে, উনাদের ধূলি-বালি মুবারক উনাদের স্পর্শ মুবারক-এ ধন্য হবেন, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাছিল করবেন। সুবহানাল্লাহ! (শুধু তাই নয়,) আমার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনার স্পর্শ মুবারক পাওয়ার কারণে, উনাদের ধূলি-বালি মুবারক লাভ করে বরকতময় হয়ে আরো পবিত্রতা হাছিল করবেন এবং অন্য সবার উপর ফখর করবেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত না’লাইন শরীফ পরিধান মুবারক করা অবস্থাতেই সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করলেন। আর সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ মুবারক উনার স্পর্শ মুবারক লাভ করে, উনাদের ধূলি-বালি মুবারক পেয়ে ইয্যত-সম্মান, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাছিল করলেন।” সুবাহানাল্লাহ! (ফাতহুল মুত‘য়াল ফী মাদহি খইরিন নি‘য়াল শরীফ)
দশম হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূত্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘ই’জাযুল কুরআন শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ্য করেন,
وَمَوْلَانَا مُـحَمَّدٌ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَـمَّا زُجَّ بِهٖ فِىْ عَالَـمِ الْعِزَّةِ اَرَادَ اَنْ يـَّخْلَعَ نَعْلَيْهِ فَاِذَا النِّـدَاءُ يَا مـُحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا تَـخْلَعْ نَعْلَيْكَ. فَقَالَ يَا رَبِّ سَــمِعْتُكَ تَقُوْلُ لِـمُوْسٰى عَلَيْهِ السَّلَامُ فَاخْلَعْ نَعْلَيْكَ .فَقَالَ يَا مُحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَئِنْ اَمَرْتُ حَضْرَتْ مُوْسٰى عَلَيْهِ السَّلَامُ بِنَزْعِ نَعْلَيْهِ عَلـٰى جَبَلِ الطُّوْرِ فَقَدْ اَبَـحْنَا لَكَ اَنْ تَطَأَ بِنَعْلَيْكَ عَلـٰى بَسَاطِ النُّوْرِ لِاَنَّكَ الْمُكَرَّمُ عِنْدَنَا وَالْعَزِيْزُ لَدَيْنَا.
“আর আমাদের যিনি মাওলা, নবী-রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন (সম্মানিত মি’রাজ শরীফ উনার রজনীতে) সম্মানিত ইয্যত উনার জগতে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করলেন তথা সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক উনার নিকটবর্তী হলেন, তখন তিনি উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলার চিন্তা মুবারক করলেন। এমতাস্থায় মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ওহী মুবারক করেন, হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, দয়া করে আপনি আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলবেন না। অর্থাৎ আপনি সম্মানিত না’লাইন শরীফসহ আমার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করুন। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আয় বারে ইলাহী, আমি তো শুনেছি, আমি জানি, আপনি জলীলুল ক্বদর নবী ও রসূল হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেছিলেন,
فَاخْلَعْ نَعْلَيْكَ
অর্থ: (আপনি সম্মানিত তূর পাহাড়ে তাশরীফ মুবারক রাখতে যাচ্ছেন। তাই) আপনি আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলে আসুন। (সম্মানিত সূরা ত্বহা শরীফ: সম্মানিত আয়াত শরীফ ১২)
তারপর মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, যদিও আমি হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলে সম্মানিত তূর পাহাড়ে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ মুবারক প্রদান করেছি। কিন্তু আমি আপনার ক্ষেত্রে এটাই পছন্দ করি যে, আপনি যেন আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফসহ সম্মানিত নূর মুবারক উনার প্রশস্ত ময়দান মুবারক-এ তথা নূরে নূরময় আমার সম্মানিত নূরানী আরশে আযীম মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! কেননা আপনি আমার নিকট সবচেয়ে সম্মানিত এবং সর্বাধিক প্রিয়, মাহবূব। সুবহানাল্লাহ! (আমার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনার পরশে, উনাদের ধূলি-বালি মুবারক পেয়ে ধন্য হবেন, শান-মান, ফাযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাছিল করবেন। শুধু তাই নয়, আমার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনার স্পর্শ মুবারক লাভ করে, উনার ধূলি-বালি মুবারক পেয়ে বরকতময় হয়ে আরো পবিত্রতা হাছিল করবেন এবং অন্য সবার উপর ফখর করবেন।)” সুবহানাল্লাহ! (ই’জাযুল কুরআন শরীফ ৩/৬৩)
এখন বলার বিষয় হচ্ছে, হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন একজন জলীলুল ক্বদর নবী এবং রসূল। সুবহানাল্লাহ! যদি কিতাব হিসেবে ধরা হয়, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিষয়টি আলাদা। এছাড়া অন্যান্য সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন প্রথম। সুবহানাল্লাহ! আর উনাকেই তূর পাহাড়ে যেতে হয়েছিলো উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলে। কেননা সেখানে সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক উনার সত্তর হাজার ভাগের এক ভাগ নূর মুবারক বর্ষিত হয়েছিলো বা যাহির হয়েছিলো। অন্যদিকে সাধারণ মাটি, ধূলি-বালি যার কোনো ক্বদর নেই; কিন্তু নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত স্পর্শ মুবারক-এ আসার কারণে উক্ত মাটি, ধূলি-বালির মর্যাদা, শ্রেষ্ঠত্ব, পবিত্রতা আসমান-যমীন, কা’বা শরীফ, কুরসী শরীফ, এমনকি মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক থেকেও লক্ষ-কোটিগুণ বেশি হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনার ধূলি-বালি মুবারক পেয়ে সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক আরো পবিত্রতা হাছিল করেছেন, সম্মানিত ও বরকতময় হয়েছেন এবং সকলের উপর ফখর করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
এখানে আরো একটি বিষয় ফিকিরের যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সরাসরি স্পর্শ মুবারক পেয়েছেন উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ। আর সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনার স্পর্শ মুবারক পেয়েছে ধূলি-বালি। ফলে ধূলি-বালি এতো পবিত্রতা, ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাছিল করলেন যে, সম্মানিত মি’রাজ শরীফ উনার রজনীতে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার আরশে আযীম মুবারক সেই ধূলি-বালি মুবারক লাভ করার জন্য বেক্বারর-পেরেশান হয়ে গেলেন। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনার ধূলি-বালি মুবারক পেয়ে স্বয়ং আরশে আযীম মুবারক ধন্য হলেন, মর্যাদা-মর্তবা হাছিল করলেন, সম্মানিত হলেন, বরকতময় হলেন এবং আরো পবিত্রতা হাছিল করলেন; এমনকি এই কারণে অন্য সকলের উপর ফখর করলেন। সুবহানাল্লাহ! যদি এই বিষয়টি এরূপ হয়, তাহলে সরাসরি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সম্পৃক্ত, উনার সম্মানিত ওজূদ পাক উনার সাথে সম্পৃক্ত সুমহান বরকতময় পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ উনার গুরুত্ব, তাৎপর্য, ফাযায়িল-ফযীলত ও বুযূর্গী-সম্মান মুবারক মুবারক কত বেমেছাল সেটা সমস্ত জিন-ইনসান তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! যা কস্মিনকালেও ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন হচ্ছে পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ উনাকে যথাযথ তা’যীম-তাকরীম, যওক্ব-শওক্ব ও মুহব্বতের সাথে উদযাপন করা। সুবহানাল্লাহ! এই মুবারক দিনে খুশি প্রকাশ করে সাধ্যমতো হাদিয়া পেশ করা, গোসল করা, ভালো খাওয়া, অধিক পরিমাণে পবিত্র মীলাদ শরীফ, পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ ও পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করা। এর সাথে সাথে দান-ছদক্বাও করা। আর বাংলাদেশসহ সকল মুসলিম ও অমুসলিম সরকারের জন্য দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো- এ মুবারক দিনটি পালনের সর্বপ্রকার ব্যবস্থা গ্রহণসহ এ মুবারক দিন উপলক্ষে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা। এবং সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিশু শ্রেণী হতে সর্বোচ্চ শ্রেণী পর্যন্ত সকল শ্রেণীর সিলেবাসে এ মুবারক দিবস উনার গুরুত্ব-তাৎপর্য অন্তর্ভুক্ত করা।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম উনার সম্মানার্থে সেই তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
http://al-ihsan.net/FullText.aspx?subid=1&textid=12310
http://al-ihsan.net/FullText.aspx?subid=1&textid=12310

0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন