এই সম্পর্কে ১০ম হিজরী শতক উনার মুজাদ্দিদ হযরত ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূত্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার বিশ্বখ্যাত কিতাব ‘আল হাওই শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেন,
مَا رُوِىَ اَنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا دَفَنَ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ قُلِ اللهُ رَبِّـىْ وَرَسُوْلُ اللهِ اَبِىْ وَالْاِسْلَامُ دِيْنِىْ فَقِيْلَ لَهٗ يَا رَسُوْلَ اللهِ اَنْتَ تُلَقِّنُهٗ فَمَنْ يُّلَقِّنُنَا فَاَنْزَلَ اللهُ تَعَالـٰى {يُثَبِّتُ اللهُ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ فِى الْـحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِي الْاٰخِرَةِ}  وَفِىْ رِوَايَةٍ  عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ  اَنَّهٗ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا دَفَنَ وَلَدَهٗ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَقَفَ عَلـٰى قَبْرِهٖ وَقَالَ يَا بُنَىَّ اِنَّ الْقَلْبَ يَحْزَنُ وَالْعَيْنَ تَدْمَعُ وَلَا نَقُوْلُ مَا يُسْخِطُ الرَّبَّ اِنَّا ِ لِلّٰهِ وَاِنَّا اِلَيْهِ رَاجِعُوْنَ يَا بُنَىَّ قُلِ اللهُ رَبِّـىْ وَالْاِسْلَامُ دِيْنِىْ وَرَسُوْلُ اللهِ اَبِىْ فَبَكَتِ الصَّحَابَةُ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُمْ وَمِنْهُمْ عُمَرُ حَتَّى ارْتَفَعَ صَوْتُهٗ فَالْتَفَتَ اِلَيْهِ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ مَا يُبْكِيْكَ يَا حَضْرَتْ عُمَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ فَقَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ هٰذَا وَلَدُكَ وَمَا بَلَغَ الْـحُلُمَ وَلَا جَرٰى عَلَيْهِ الْقَلَمُ وَيَحْتَاجُ اِلـٰى تَلْقِيْنِ مِثْلِكَ تُلَقِّنُهُ التَّوْحِيْدَ فِىْ مِثْلِ هٰذَا الْوَقْتِ فَمَا حَالُ حَضْرَتْ عُمَرَ عَلَيْهِ السَّلَامُ وَقَدْ بَلَغَ الْـحُلُمَ وَجَرٰى عَلَيْهِ الْقَلَمُ وَلَيْسَ لَهٗ مُلَـقِّـنٌ مِّـثْـلُـكَ فَبَكَى النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَبَكَتِ الصَّحَابَةُ مَعَهٗ وَنَزَلَ جِبْرِيْلُ عَلَيْهِ السَّلَامُ بِقَوْلِهٖ تَعَالـٰى{يُـثَـبِّتُ اللهُ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ فِى الْـحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِى الْاٰخِرَةِ} يُرِيْدُ بِذٰلِكَ وَقْتَ الْمَوْتِ اَىْ وَعِنْدَ وُجُوْدِ الْفَتَّانِيْنَ وَعِنْدَ السُّؤَالِ فِى الْقَبْرِ فَتَلَا النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْاٰيَةَ فَطَابَتِ الْاَنْفُسُ وَسَكَنَتِ الْقُلُوْبُ وَشَكَرُوا اللهَ 
অর্থ: “সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে যা বর্ণিত রয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রাবি’ আলাইহিস সালাম উনাকে উনার মহাসম্মানিত রওযা শরীফ-এ রাখার পর ইরশাদ মুবারক করেন, ‘হে আমার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম! আপনি বলুন, মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার রব, আমার মহাসম্মানিত আব্বাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল এবং সম্মানিত ইসলাম আমার সম্মানিত দ্বীন।’ সুবহানাল্লাহ! তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলা হলো- ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি উনাকে সম্মানিত তালক্বীন মুবারক দিচ্ছেন, আমাদেরকে তালক্বীন মুবারক দিবে কে? তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি নাযিল করলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইহকাল ও পরকালে মু’মিন উনাদেরকে মজবুত বাক্য মুবারক দ্বারা মজবুত করেন।” সুবহানাল্লাহ!
 আর অপর বর্ণনায় এসছে- নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার মহাসম্মানিত আওলাদ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রাবি’ আলাইহিস সালাম উনাকে মহাসম্মানিত রওযা শরীফ-এ রাখার পর মহাসম্মানিত রওযা শরীফ উনার নিকট দাঁড়িয়ে ইরশাদ মুবারক করেন, হে আমার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম! সম্মানিত হৃদয় মুবারক ব্যথিত এবং সম্মানিত চোখ মুবারক থেকে অজস্র ধারায় নূরুল মুহব্বত মুবারক  প্রবাহিত হচ্ছে। আর আমরা এমন কিছু বলি না, যা মহান আল্লাহ পাক উনাকে অসন্তুষ্ট করে। অর্থাৎ আমরা যা বলছি বা করছি তা মহান আল্লাহ পাক রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক উনার কারণ। সুবহানাল্লাহ! নিশ্চয়ই আমরা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য এবং উনার নিকটই আমারা প্রত্যাবর্তন করবো। হে আমার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম! আপনি বলুন, মহান আল্লাহ পাক তিনি আমার রব, সম্মানিত ইসলাম আমার সম্মানিত দ্বীন এবং আমার মহাসম্মানিত আব্বাজান ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল। সুবহানাল্লাহ! তখন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা কান্না মুবারক করতে লাগলেন। উনাদের মধ্যে সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনিও ছিলেন। তিনি এমন কঠিনভাবে কান্না মুবারক করলেন যে, উনার কান্না মুবারক উনার আওয়াজ মুবারক উঁচু হয়ে গেল। 
তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার দিকে সম্মানিত দৃষ্টি মুবারক করলেন এবং বললেন, কোন্ বিষয় আপনাকে কাঁদাচ্ছে? জবাবে তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ইবনু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত আন নূরুর রাবি’ আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন স্বয়ং আপনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! আর উনার বয়স মুবারক অল্প এবং উনার উপর সম্মানিত কলম মুবারক জারি নেই তথা তিনি সম্মানিত শরীয়ত মুবারক উনার বিধান জারি হওয়ার বয়স মুবারকেও উপনীত হননি। (উনার তো কস্মিনকালেও কোন তালক্বীন মুবারক উনার প্রয়োজন নেই।) অথচ মহান আল্লাহ পাক উনার পরেই আপনার স্থান, স্বয়ং আপনি নিজে এই মুহূর্তে উনাকে সম্মানিত তাওহীদ মুবারক উনার সম্মানিত তালক্বীন মুবারক দিচ্ছেন। তাহলে ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার কী অবস্থা হবে? তিনি তো প্রাপ্ত বয়স মুবারক-এ উপনীত হয়েছেন এবং উনার উপর সম্মানিত কলম মুবারক জারি রয়েছে তথা সম্মানিত শরীয়ত মুবারক উনার বিধান জারি রয়েছে; কিন্তু উনার জন্য আপনার মতো তালক্বীন দানকারী নেই। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নূরুল মুহব্বত মুবারক প্রবাহিত করতে লাগলেন এবং উনার সাথে সাথে সমস্ত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারাও কান্না মুবারক করতে লাগলেন। সুবহানাল্লাহ! তখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত ওহী মুবারক নিয়ে আগমন করলেন,
يُـثَـبِّتُ اللهُ الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا بِالْقَوْلِ الثَّابِتِ فِى الْـحَيَاةِ الدُّنْيَا وَفِى الْاٰخِرَةِ 
“মহান আল্লাহ পাক তিনি ইহকাল ও পরকালে মু’মিনগণ উনাদেরকে মজবুত বাক্য মুবারক দ্বারা মজবুত করেন।” সুবহানাল্লাহ! 
এখানে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইহকাল ও পরকাল দ্বারা মৃত্যুর সময় উদ্দেশ্য করেছেন। অর্থাৎ ফিতনার সময় এবং ক্ববরে সুওয়াল-জাওয়াবের সময় উদ্দেশ্য। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উক্ত সম্মানিত আয়াত শরীফ তিলাওয়াত মুবারক করলেন। তখন সমস্ত হযরত ছাহাবয়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সকলের মন আনন্দিত হলো, উনাদের অন্তর মুবারকগুলো ইতমিনান মুবারক লাভ করলো  এবং উনারা মহান আল্লাহ পাক উনার শুকরিয়া মুবারক আদায় করলেন। সুবহানাল্লাহ! (তুহফাতুল হাবীব আলা শারহিল খ¦ত্বীব ২/২৯৮, আল হাওই লিস সুয়ূত্বী ২/২১৪, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ১১/২৫)
http://al-ihsan.net/FullText.aspx?subid=1&textid=12384
http://al-ihsan.net/FullText.aspx?subid=1&textid=12384
 

 
 
 
 
 
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন