আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা ইমাম খলীফাতুল্লাহ হযরত আস সাফফাহ আলাইহিছ ছলাতু ওয়াস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যেই সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, কারো পক্ষে এটা সম্ভব হয়নি আর হবেও না।” সুবহানাল্লাহ!
তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ شَاهِدًا وَمُبَشِّرًا وَنَذِيرًا. لِتُؤْمِنُوا بِاللهِ وَرَسُولِهٖ وَتُعَزِّرُوهُ وَتُوَقِّرُوهُ وَتُسَبِّحُوهُ بُكْرَةً وَأَصِيلًا. অর্থ: “(হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম,) নিশ্চয়ই আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি, সৃষ্টি করেছি শাহিদ সাক্ষ্যদাতা, উপস্থিত, (হাযির-নাযির) হিসেবে। যাতে করে তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের প্রতি ঈমান আনতে পারো। তোমরা উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেও, উনাকে তা’যীম-তাকরীম মুবারক করো এবং উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করো সকাল-সন্ধ্যা তথা অনন্তকাল দায়িমীভাবে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা ফাত্হ শরীফ: সম্মানিত আয়াত শরীফ ৮-৯) এই সম্মানিত আয়াত শরীফ উনার পরিপূর্ণ হাক্বীক্বী মিছদাক্ব ছিলেন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি।” সুবহানাল্লাহ! এখন উপরোক্ত বিষয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ!। সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ: উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনিই সেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টি জগতে সর্বপ্রথম সম্মানিত ইসলাম ও সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! এই সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, اَوَّلُ مَنْ اَسْلَمَ وَاٰمَنَ فِىْ خَلْقِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ لَـمْ يتقدم رَجُلٌ وَلَا اِمْرَاَةٌ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ خَدِيْجَةُ عَلَيْهِا السَّلَامُ. অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনিই মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টি জগতে সর্বপ্রথম সম্মানিত ইসলাম ও ঈমান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার পূর্বে কোন পুরুষ মহিলা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেনি এবং সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেনি।” সুবহানাল্লাহ! এই সম্পর্কে সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, عَنْ رَبِيعَةَ السَّعْدِيِّ قَالَ أَتَيْتُ حُذَيْفَةَ بْنَ الْيَمَانِ وَهُوَ فِي مَسْجِدِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَمِعْتُهُ يَقُولُ كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ خَدِيجَةُ بِنْتُ خُوَيْلِدٍ سَابِقَةُ نِسَاءِ الْعَالَمِينَ إِلَى الْإِيمَانِ بِاللَّهِ وَبِمُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. অর্থ: “হযরত রাবী‘আহ সা’দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন। আমি হযরত হুযায়ফাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার নিকট আসলাম। তখন তিনি মসজিদে নববী শরীফ-এ অবস্থান মুবারক করতেছিলেন। আমি উনাকে বলতে শুনেছি, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করার ক্ষেত্রে মহান আল্লাহ পাক উনার কায়িনাতে যত মহিলা রয়েছেন সকলের অগ্রগামী। অথাৎ তিনি সকলের পূর্বে সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম ৩/২০৩, আল ফাতহুল কাবীর ২/৮০ ইত্যাদি) সেটাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, قَدْ آمَنَتْ بِي إِذْ كَفَرَ بِي النَّاسُ অর্থ: “মানুষ যখন আমাকে অস্বীকার করেছে, ঈমান আনেনি, তখন তিনি সর্বপ্রথম আমার প্রতি ঈমান মুবারক এনেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ শরীফ) তিনি সর্বপ্রথম ঈমান মুবারক প্রকাশ করেছেন এবং কায়িনাতের মাঝে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম ও সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক: উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন আরবের মধ্যে সবচেয়ে বড় সম্পদশালিনী। উনার মত সম্পদশালী আরবে আর কেউ ছিলো না। সমস্ত কুরাইশদের যত সম্পদ ছিলো উনার এককভাবে তার চেয়ে বেশি সম্পদ মুবারক ছিলো। সেই যামানায় উনার লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি টাকার ব্যবসা-বাণিজ্য ছিলো। কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, যেখানে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেখান থেকে সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ তাশরীফ মুবারক নেয়ার জন্য প্রতি সম্মানিত ক্বদম মুবারক-এর নিচে একটি করে সম্মানিত স্বর্ণের প্লেট মুবারক দেয়া হয়েছিলো। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বর্ণের প্লেট মুবারক-এ এক এক ক্বদম মুবারক রেখে সম্মানিত হুজরা শরীফ তাশরীফ মুবারক নিয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ! এখন যদি ৫০টা প্লেট ধরা হয়, আর প্রতিটি প্লেট যদি ৩ কেজি করে ধরা হয়। তাহলে দেখা যাচ্ছে ১৫০ কেজি স্বর্ণ, সম্মানতি নিসবতে আযীম শরীফ উনার সময় শুধু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ক্বদম মুবারক উনার নিচে তিনি বিছিয়ে দিয়েছেন। তাহলে উনার কতো সম্পদ ছিলো এবং কতো বেমেছালভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, সেটা সকলের চিন্তা-কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! যেই সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ হয়েছিলো, তিনি সেই হুজরা শরীফ রেখে উনার ভাতিজা হাকীম ইবনে হিজাম উনার থেকে একটা বাড়ি কিনে সেখানে তিনি চলে আসেন। সুবহানাল্লাহ! সেখানে তারশরীফ মুবারক নিয়ে বসবাস করেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক করা পর্যন্ত সেই সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ অবস্থান মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! আর পূর্বের যেই বাড়ি মুবারক ছিলো, সেইটা বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ উনার সময় উনাকে সম্মানিত হাদিয়া মুবারক করা হয়েছিলো। সুবহানাল্লাহ! সেই সম্মানিত বাড়ি মুবারক-এ যুন্ নূর সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল আছ আলাইহিস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম উনারা সম্মানিত অবস্থান মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! উনার মত সম্পদশালিনী আরবে কিন্তু আর কেউ ছিলো না। সুবহানাল্লাহ! তিনি উনার সেই সমস্ত সম্পদ মুবারকগুলো সম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রকাশের পূর্বে এবং পরে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ বিলিয়ে দিয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তাহলে তিনি সম্মানিত ধন-সম্পদ মুবারক দিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতটুকু সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছিলেন, সেটা চিন্তা-ফিকিরের বিষয়। মানুষ কখনও সেটা চিন্তা-ফিকির করে মিলাতে পারবে না। সুবহানাল্লাহ! সেটাই নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, وَوَاسَتْنِي بِمَالِهَا إِذْ حَرَمَنِي النَّاسُ অর্থ: “মানুষ যখন আমার কোন সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়নি, তখন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি উনার সমস্ত মাল-সম্পদ দিয়ে আমার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন এবং আমাকে সান্তনা মুবারক দিয়েছেন।” (মুসনাদে আহমদ শরীফ) সম্মানিত ওহী মুবারক নাযিল হওয়ার পূর্বে নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ‘সম্মানিত হেরা গুহা মুবারক’-এ সম্মানিত অবস্থান মুবারক করতেন। তখন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি সেখানে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য সম্মানিত খাবার মুবারক নিয়ে যেতেন। সুবহানাল্লাহ! ১৯৮৫ সালের কথা তখন এমনিতে স্বাভাবিকভাবে একজন সুস্থ-সবল ও যুবক লোকের জন্য হেরা গুহায় উঠতে প্রায় ২:৩০ থেকে ৩:০০ ঘন্টা সময় লাগতো এবং অনেক কষ্ট হতো। তাহলে ১৪০০ বৎসর আগে কি অবস্থা ছিলো? আর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক তো তখন অনেক ছিলো, তখন তিনি এই অবস্থায় কিভাবে, কতোটুকু ত্যাগ ও কষ্ট সহ্য করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু অলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ খাবার মুবারক নিয়ে গেছেন এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, সেটা চিন্তা ফিকিরের বিষয়। সুবহানাল্লাহ! তিনি আরবের মধ্যে সবচেয়ে সম্পদশালিনী ছিলেন। ইচ্ছা করলে অসংখ্য খাদিম নিয়োগ করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য ‘সম্মানিত হেরা গুহায় মুবারক’-এ সম্মানিত খাবার মুবারক পাঠিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি সেটা করেননি। তিনি উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম হওয়া সত্ত্বেও, উনার এতো অধিক বয়স মুবারক হওয়া সত্ত্বেও, তিনি সীমাহীন কষ্ট সহ্য করে সেই সুউচ্চ ‘সম্মানিত হেরা গুহা মুবারক-এ’ উঠে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য সম্মানিত খাবার মুবারক নিয়ে গেছেন এবং সেখানে গিয়ে উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তাহলে তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কতো সীমাহীন মুহব্বত মুবারক করেছেন এবং কতো বেমেছালভাবে উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, তা সকলের চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! মূলত, তা কায়িনাতের বুকে এক নযীরবিহীন দৃষ্টান্ত মুবারক। কেউ এরূপভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়নি। তিনি ব্যতীত আর কারো পক্ষে এটা সম্ভবও হয়নি। সুবহানাল্লাহ! এক দিনের কথা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য ‘সম্মানিত হেরা গুহায়’ সম্মানিত খাবার মুবারক নিয়ে আসছিলেন, তখন স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজে উনার জন্য সুসংবাদ প্রেরণ করেন। যেটা সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে, عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ أَتَى جِبْرِيلُ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ يَا رسولَ اللهِ هَذِهِ خَدِيجَةُ عليها السلام قَدْ أَتَتْ مَعَهَا إِنَاءٌ فِيهِ إِدام وَطَعَام فَإِذَا أَتَتْكَ فَاقْرَأْ عَلَيْهَا السَّلَامَ مِنْ رَبِّهَا وَمِنِّي وَبَشِّرْهَا بِبَيْتٍ فِي الْجَنَّةِ مِنْ قَصَبٍ لَا صَخَبَ فِيهِ وَلَا نَصَبَ . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এই যে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি একটি পাত্র মুবারক নিয়ে আপনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক নিচ্ছেন। এই সম্মানিত পাত্র মুবারক-এ তরকারি মুবারক এবং খাদ্য মুবারক রয়েছেন। তিনি যখন আপনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক নিবেন, তখন আপনি উনাকে উনার রব মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে এবং আমার অর্থাৎ আমি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার পক্ষ থেকে সালাম জানাবেন। আর উনাকে সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মধ্যে মুক্তাখচিত এমন একটি সম্মানিত প্রাসাদ তথা সম্মানিত বালাখানা মুবারক সম্পর্কে সুসংবাদ মুবারক প্রদান করবেন, যেখানে কোনো শোরগোল নেই, কোনো ক্লান্তি তথা কষ্ট-ক্লেশ নেই।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ) তাহলে এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহিস সালাম তিনি কত বেমেছালভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন যে, উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ খুশি হয়ে স্বয়ং যিনি খ¦ালিক্ব রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে সম্মানিত সালাম মুবারক জানিয়েছেন এবং উনাকে সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার সম্মানিত সুসংবাদ মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! শি’বে আবী ত্বালিবের কথা। যখন তিনি সেখানে তাশরীফ মুবারক নেন, তখন উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন, প্রায় ৬২ বছর। শি’বে আবী ত্বালিবে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের এরূপ অবস্থা হয়েছিলো যে, উনারা খাদ্য না পেয়ে গাছের লতা-পাতা, ছাল-বাকল পর্যন্ত খেয়েছিলেন। এমনকি উনারা চামড়ার না’লাঈন শরীফ (জুতা) পানিতে সিদ্ধ করে চিবিয়েছেন। গাছের লতা-পাতা, ছাল-বাকল খাওয়ার ফলে উনাদের ইস্তিঞ্জা মুবারক বকরীর লেদের মত হয়ে গিয়েছিলো। সুবহানাল্লাহ! ক্ষুধার্ত শিশু উনাদের কান্না মুবারক-এ আশে-পাশের লোকেরা রাতে ঘুমাতে পারতো না। এই কঠিন পরিস্থিতেও উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি শি’বে আবী ত্বালিবে ৩ বছর অবস্থান করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি তখন কখনো কখনো সম্মানিত মারীদ্বী শান (অসুস্থতা মুবারক) গ্রহণ করতেন এবং কখনো কখনো সম্মানিত ছিহ্হাতী শান (সুস্থতা মুবারক) গ্রহণ করতেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি কিন্তু অনেক সম্পদশালিনী ছিলেন, তিনি ইচ্ছা করলে পারতেন, শি’বে আবী ত্বালিবে না যেয়ে সুখ-শান্তিতে অবস্থান মুবারক করতে। কিন্তু তিনি সেটা করেননি। উনার এতো বয়স মুবারক হওয়া সত্ত্বেও তিনি শি’বে আবী ত্বালিবে দীর্ঘ ৩ বছর অবস্থান মুবারক করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন। সুবহাল্লাহ! তাহলে তিনি নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কতটুকু সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করেছেন, উনার তা’যীম-তাকরীম মুবারক করেছেন, উনার কতটুকু সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নবী-রসূল হিসেবে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে এবং হাবীবুল্লাহ হিসেবে সৃষ্টি হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! দুনিয়াবী জেন্দগী মুবারক অনুযায়ী যখন উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ৪০ বছর, তখন আনুষ্ঠানিভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত-রিসালাত মুবারক প্রকাশ পায়। উনার উপর আনুষ্ঠানিভাবে সম্মানিত ওহী মুবারক নাযিল হয়। মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম তিনি (সম্মানিত হেরা গুহা মুবারক-এ) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সম্মানিত ওহী মুবারক নিয়ে আসেন। সুবহানাল্লাহ! এখন এই বিষয়টা উম্মতকে বুঝানোর জন্য নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত হেরা গুহা মুবারক থেকে সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ এসে বিষয়টা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার নিকট প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! এখন বিষয়টি অত্যন্ত কঠিন একটি বিষয়। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন এবং উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি একজন উম্মত। এখন বিষয়টা মানুষের জন্য বিশ্বাস করার বিষয় এবং ইস্তিক্বাম থাকার বিষয়। কিন্তু উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি বিষয়টা শুনার পর কোনো চিন্তিত হননি, বিচলিত হননি, কোনো প্রকার ঘাবড়াননি। তিনি অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবে নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম উনাকে এই বলেন সান্তনা মুবারক দিলেন যে, চিন্তার কোন কারণ নেই ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, এই বিষয়টা যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে আপনার উপর নাযিল করা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! কারণ আপনার জন্য কোন দিন কোন খারাপী হবে না। আপনি তো সব সময় মানুষের উপকার করে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! ইত্যাদি ইত্যাদি নিজ থেকে বলে উল্টো তিনি সান্তনা মুবারক দিলেন। সুবহানাল্লাহ! এবং তিনি বিষয়টি তাছদীক্ব করার জন্য উনার সম্মানিত চাচাতো ভাই হযরত ওরাক্বাহ ইবনে নাওফিল রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু যিনি পূর্ববর্তী সম্মানিত আসমানী কিতাবের উপর অত্যন্ত দক্ষ ছিলেন উনার কাছে যাওয়ার প্রস্তাব মুবারক দিলেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি বললেন, চলুন, আমরা সেখানে যাই। মূলত, এটা হচ্ছে উম্মতকে শিক্ষা দেয়ার জন্য। সুবহানাল্লাহ! উনার সেখানে গেলেন। হযরত ওরাক্বাহ বিন নাওফিল রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত জবান মুবারক-এ বিষয়টি শুনে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বললেন, “যিনি আপনার নিকট এসেছেন তিনি হচ্ছেন হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম এবং আপনি হচ্ছেন আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ! কাজেই এটা সম্মানিত ওহী মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। আপনার নিকট আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত ওহী মুবারক নাযিল হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! উম্মুল মু’মিনীন কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি বিষয়টা তাছদীক্ব করলেন। তিনি কিন্তু বিচলিত হতে পারতেন, চিন্তিত হতে পারতেন, ভয় পেতে পারতেন, অনেক কিছু করতে পারতেন। কিন্তু তিনি উল্টা বিষয়গুলো এতো স্বাভাবিকভাবের সাথে, ইতমিনানের সাথে তিনি গ্রহণ করলেন এবং জবাব দিলেন, যেটা ঠিক যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার যেন সরাসরি ক্বায়িম-মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ! এটা অত্যন্ত সূক্ষ্ম বিষয়, ফিকিরের বিষয়। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতো বেমেছালভাবে তা’যীম-তাকরীম করেছেন, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করেছেন, উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার সম্মানিত আনজাম মুবারক দিয়েছেন, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান তামাম-কায়িনাবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, عَنْ حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ عَائِشَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ قَالَتْ بَيْنَا رَأْسُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي حِجْرِيْ لَيْلَةٍ ضَاحِيَةٍ إِذْ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ هَلْ يَكُوْنُ لِأَحَدٍ مِنَ الْحَسَنَاتِ عَدَدُ نُجُوْمِ السَّمَاءِ قَالَ نَعَمْ حَضْرَتْ عُمَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ قُلْتُ فَأَيْنَ حَسَنَاتُ حَضْرَتْ أَبِي بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ إِنَّمَا جَمِيْعُ حَسَنَاتِ حَضْرَتْ عُمَرَ عَلَيْهِ السَّلَامُ كَحَسَنَةٍ وَاحِدَةٍ مِنْ حَسَنَاتِ حَضْرَتْ أَبِي بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ. অর্থ: “উম্মুল মু’মিনী সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক জ্যোস্নার রাতে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার কোল মুবারক-এ মাথা মুবারক রেখে শুয়ে ছিলেন। আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কারো কি আকাশের তারকার সপরিমাণ নেকী মুবারক রয়েছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম উনার আকাশের তারকার সমপরিমাণ নেকি মুবারক রয়েছে। সুবহানাল্লাহ! তখন আমি বললাম, তাহলে ছিদ্দীক্বে আকবর সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নেকী মুবারক উনার পরিমাণ কত? জবাবে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার জিন্দেগীর সমস্ত নেকী মুবারক হচ্ছে, সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার একখানা সম্মানিত নেকী মুবারক উনার সমান।” সুবহানাল্লাহ! (রযীন শরীফ, জামিউল উছূল শরীফ লিইবনে আছীর, মিশকাত শরীফ) আর তা হচ্ছে, আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া, ছিদ্দীক্বে আকবর সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক উনার সময় সম্মানিত সাওর গুহায় তিন দিন তিন রাত্রি নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দিয়ে যেই নেকী মুবারক অর্জন করেছিলেন, সেই সম্মানিত নেকী মুবারক। সেই সম্মানিত খিদমত মুবারকখানা হচ্ছেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার জিন্দেগীর সমস্ত নেকী মুবারক উনার সমান। সুবহানাল্লাহ! এখন বলার বিষয় হচ্ছে যে, যদি সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক উনার সময় সম্মানিত সাওর গুহায় তিন দিন তিন রাত্রি নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দিয়ে এতো বেমেছাল নেকী মুবারক অর্জন করেন যে, সেই সম্মানিত নেকী মুবারক সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার জিন্দেগীর সমস্ত নেকী মুবারক উনার সমান হয়। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি যে, একধারে ২৫ বছর বেমেছালভাবে সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দিলেন, যার কোন মেছাল নেই, পৃথিবীর ইতিহাসে কারো পক্ষে এরূপ বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া হয়নি। তাহলে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত নেকী মুবারক পরিমাণ কতো সীমাহীন হবেন, সেটা জিন-ইনসানের চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, তা কেউ ভাষা দিয়ে প্রকাশ করতে পারবে? কস্মিনকালেও নয়। সুবহানাল্লাহ! যেটা সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, اِنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا اُسْرِىَ بِهٖ لَيْلَةَ الْمِعْرَاجِ اِلَى السَّمٰوَاتِ الْعُلـٰى وَوَصَلَ اِلَى الْعَرْشِ الْمُعَلّٰى اَرَادَ خَلْعَ نَعْلَيْهِ اَخْذًا مِّـنْ قَوْلِهٖ تَعَالـٰى لِسَيِّدِنَا حَضْرَتْ مُوسٰى عَلَيْهِ السَّلَامُ حِيْنَ كَلَّمَهٗ فَاخْلَعْ نَعْلَيْكَ اِنَّكَ بِالْوَادِ الْمُقَدَّسِ طُوًى. فَنُوْدِىَ مِنَ الْعَـلِـىِّ الْاَعْلـٰى يَا حَضْرَتْ مُـحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا تَـخْلَعْ نَعْلَيْكَ فَاِنَّ الْعَرْشَ يَتَشَرَّفُ بِقُدُوْمِكَ مُتَنَعِّـلًا وَّيَفْتَخِرُ عَلـٰى غَيْرِهٖ مُتَـبَـرِّكًـا فَصَعِدَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِلَى الْعَرْشِ وَفِىْ قَدَمَيْهِ النَّعْلَانِ وَحَصَلَ لَهٗ بِذٰلِكَ عِزٌّ وَّشَأْنٌ. অর্থ: “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত মি’রাজ শরীফ উনার রাতে সুউচ্চ সপ্ত আসমান অতিক্রম করে সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক উনার নিকটবর্তী হলেন, তখন তিনি উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলে সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক নেয়ার চিন্তা মুবারক করলেন। মহান আল্লাহ পাক উনার ওই বাণী মুবারক ফিকির করে, যেটা মহান আল্লাহ পাক তিনি (যখন সাইয়্যিদুনা হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি তূর পাহাড়ে মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কথা বলার জন্য তাশরীফ মুবারক রাখবেন, তখন) হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেছিলেন, فَاخْلَعْ نَعْلَيْكَ اِنَّكَ بِالْوَادِ الْمُقَدَّسِ طُوًى. ‘আপনি আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ মুবারক খুলুন। কেননা আপনি সম্মানিত (তূর পাহাড়ের) পবিত্র তুয়া উপত্যকায় তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করতে যাচ্ছেন। (সেখানে আমার সম্মানিত আরশে আযীম থেকে ৭০ হাজার ভাগের এক ভাগ সম্মানিত নূর মুবারক পতিত হয়েছে। যার কারণে সেই স্থানটি সম্মানিত ও পবিত্র হয়ে গেছে। সুবহানাল্লাহ! তাই আপনি সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলে আসুন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এই বিষয়টি ফিকির করে উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলার চিন্তা করেছিলেন।) তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি ওহী মুবারক করলেন, হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! দয়া করে আপনি আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলবেন না। অর্থাৎ আপনি আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফসহ আমার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করুন। কেননা আমার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনাদের পরশে, উনাদের ধূলি-বালি মুবারক উনাদের স্পর্শ মুবারক-এ ধন্য হবেন, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাছিল করবেন। সুবহানাল্লাহ! (শুধু তাই নয়,) আমার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনাদের স্পর্শ মুবারক পাওয়ার কারণে, উনাদের ধূলি-বালি মুবারক লাভ করে বরকতময় হয়ে আরো পবিত্রতা হাছিল করবেন এবং অন্য সবার উপর ফখর করবেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত না’লাইন শরীফ পরিধান মুবারক করা অবস্থাতেই সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করলেন। আর সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ মুবারক উনাদের স্পর্শ মুবারক লাভ করে, উনাদের ধূলি-বালি মুবারক পেয়ে ইয্যত-সম্মান, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাছিল করলেন।” সুবাহানাল্লাহ! (ফাতহুল মুত‘য়াল ফী মাদহি খইরিন নি‘য়াল শরীফ) এখন বলার বিষয় হচ্ছে, হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন একজন জলীলুল ক্বদর নবী এবং রসূল। সুবহানাল্লাহ! যদি কিতাব হিসেবে ধরা হয়, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিষয়টি আলাদা। এছাড়া অন্যান্য সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন প্রথম। সুবহানাল্লাহ! আর উনাকেই তূর পাহাড়ে যেতে হয়েছিলো উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলে। কেননা সেখানে সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক উনার সত্তর হাজার ভাগের এক ভাগ নূর মুবারক বর্ষিত হয়েছিলো বা যাহির হয়েছিল। অন্যদিকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সরাসরি স্পর্শ মুবারক পেয়েছেন উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ। আর সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনাদের স্পর্শ মুবারক পেয়েছে ধূলি-বালি। ফলে ধূলি-বালি এতো পবিত্রতা, ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাছিল করলেন যে, সম্মানিত মি’রাজ শরীফ উনার রজনীতে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার মূল আরশে আযীম মুবারক সেই ধূলি-বালি মুবারক লাভ করার জন্য বেক্বারার-পেরেশান হয়ে গেলেন। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনাদের ধূলি-বালি মুবারক পেয়ে স্বয়ং আরশে আযীম মুবারক ধন্য হলেন, মর্যাদা-মর্তবা মুবারক হাছিল করলেন, সম্মানিত হলেন, বরকতময় হলেন এবং আরো পবিত্রতা হাছিল করলেন; এমনকি এই কারণে অন্য সকলের উপর ফখর করলেন। সুবহানাল্লাহ! যদি এই বিষয়টি এরূপ হয়, তাহলে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি যে একাধারে ২৫ বছর সরাসরি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক-এ থাকলেন, উনার সাথে অবস্থান মুবারক করলেন এবং বেমেছালভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিলেন, আর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সরাসরি স্পর্শ মুবারক-এ যে ধূলি-বালি এসেছেন, সেই ধূলি-বালি মুবারক উনাদের ফযীলত, মর্যাদা, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক ও পবিত্রতা মুবারক উনার হুকুম কী? অবশ্য অবশ্যই সেই ধূলি-বালি মুবারক উনাদের ফযীলত, মর্যাদা, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক ও পবিত্রতা মুবারকও আসমান-যমীন, সম্মানিত কা’বা শরীফ, সম্মানিত কুরসী শরীফ এবং মহান আল্লাহ পাক উনার আরশে আযীম মুবারক থেকেও লক্ষ-কোটিগুণ বেশি হবে। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনাদের ধূলি-বালি মুবারক পেয়ে সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক যেরূপ ধন্য হয়েছিলেন, মর্যাদা-মর্তবা হাছিল করেছিলেন, সম্মানিত হয়েছিলেন, বরকতময় হয়েছিলেন এবং আরো পবিত্রতা হাছিল করেছিলেন, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সরাসরি স্পর্শ মুবারক পেয়েছেন যে ‘ধূলি-বালি মুবারক’ সেই ধূলি-বালি মুবারক পেলেও মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক আরো লক্ষ-কোটি গুণ বেশি ধন্য হবেন, মর্যাদা-মর্তবা হাছিল করবেন, সম্মানিত হবেন, বরকতময় হবেন এবং পবিত্রতা হাছিল করবেন। সুবহানাল্লাহ! আরো স্পষ্টভাবে বলতে গেলে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনাদের ধূলি-বালি মুবারক পেয়ে সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক যেমনিভাবে আরো পবিত্রতা হাছিল করেছেন, সম্মানিত ও বরকতময় হয়েছেন এবং সকলের উপর ফখর করেছেন, তেমনিভাবে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনাদের সম্মানিত ধূলি-বালি মুবারক পেলেও সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক আরো পবিত্রতা হাছিল করবেন, সম্মানিত ও বরকতময় হয়ে যাবেন এবং সকলের উপর ফখর করবেন। সুবহানাল্লাহ! যদি তাই হয়, তাহলে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু যিনি খ¦ালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক রয়েছে, সমস্ত কিছুর অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! এই বিষয়গুলো কিন্তু শুধু যাঁরা হাক্বীক্বী ঈমানদার একমাত্র উনারাই বুঝবেন, উপলব্ধি করবেন এবং বিনা চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বালে মেনে নিবেন। কিন্তু যারা মুনাফিক্ব তারা এই বিষয়গুলো কস্মিনকালেও বুঝবে না, উপলব্ধি করার তো প্রশ্নোই উঠে না; বরং নানা প্রকার চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করবে। না‘ঊযুবিল্লাহ! এই প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, وَلِلَّهِ الْعِزَّةُ وَلِرَسُولِهِ وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَلكِنَّ الْمُنَافِقِينَ لَا يَعْلَمُونَ অর্থ: “সমস্ত ইজ্জত তথা শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক একমাত্র যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য, উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার (এবং উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের জন্য,) এবং মু’মিনীন উনাদের জন্য। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু মুনাফিক্বরা তা জানে না, বুঝে না।” (সম্মানিত সূরা মুনাফিকূন শরীফ: সম্মানিত আয়াত শরীফ ৮) খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে ছহীহ সমঝ দান করুন। আমীন!
http://al-ihsan.net/FullText.aspx?subid=2&textid=14794
তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ شَاهِدًا وَمُبَشِّرًا وَنَذِيرًا. لِتُؤْمِنُوا بِاللهِ وَرَسُولِهٖ وَتُعَزِّرُوهُ وَتُوَقِّرُوهُ وَتُسَبِّحُوهُ بُكْرَةً وَأَصِيلًا. অর্থ: “(হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম,) নিশ্চয়ই আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি, সৃষ্টি করেছি শাহিদ সাক্ষ্যদাতা, উপস্থিত, (হাযির-নাযির) হিসেবে। যাতে করে তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের প্রতি ঈমান আনতে পারো। তোমরা উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেও, উনাকে তা’যীম-তাকরীম মুবারক করো এবং উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করো সকাল-সন্ধ্যা তথা অনন্তকাল দায়িমীভাবে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা ফাত্হ শরীফ: সম্মানিত আয়াত শরীফ ৮-৯) এই সম্মানিত আয়াত শরীফ উনার পরিপূর্ণ হাক্বীক্বী মিছদাক্ব ছিলেন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি।” সুবহানাল্লাহ! এখন উপরোক্ত বিষয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ!। সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ: উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনিই সেই সুমহান ব্যক্তিত্বা মুবারক যিনি মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টি জগতে সর্বপ্রথম সম্মানিত ইসলাম ও সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! এই সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, اَوَّلُ مَنْ اَسْلَمَ وَاٰمَنَ فِىْ خَلْقِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ لَـمْ يتقدم رَجُلٌ وَلَا اِمْرَاَةٌ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ خَدِيْجَةُ عَلَيْهِا السَّلَامُ. অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনিই মহান আল্লাহ পাক উনার সৃষ্টি জগতে সর্বপ্রথম সম্মানিত ইসলাম ও ঈমান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! উনার পূর্বে কোন পুরুষ মহিলা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেনি এবং সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেনি।” সুবহানাল্লাহ! এই সম্পর্কে সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, عَنْ رَبِيعَةَ السَّعْدِيِّ قَالَ أَتَيْتُ حُذَيْفَةَ بْنَ الْيَمَانِ وَهُوَ فِي مَسْجِدِ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَسَمِعْتُهُ يَقُولُ كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ خَدِيجَةُ بِنْتُ خُوَيْلِدٍ سَابِقَةُ نِسَاءِ الْعَالَمِينَ إِلَى الْإِيمَانِ بِاللَّهِ وَبِمُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ. অর্থ: “হযরত রাবী‘আহ সা’দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন। আমি হযরত হুযায়ফাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার নিকট আসলাম। তখন তিনি মসজিদে নববী শরীফ-এ অবস্থান মুবারক করতেছিলেন। আমি উনাকে বলতে শুনেছি, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করার ক্ষেত্রে মহান আল্লাহ পাক উনার কায়িনাতে যত মহিলা রয়েছেন সকলের অগ্রগামী। অথাৎ তিনি সকলের পূর্বে সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুস্তাদরকে হাকিম ৩/২০৩, আল ফাতহুল কাবীর ২/৮০ ইত্যাদি) সেটাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, قَدْ آمَنَتْ بِي إِذْ كَفَرَ بِي النَّاسُ অর্থ: “মানুষ যখন আমাকে অস্বীকার করেছে, ঈমান আনেনি, তখন তিনি সর্বপ্রথম আমার প্রতি ঈমান মুবারক এনেছেন।” সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ শরীফ) তিনি সর্বপ্রথম ঈমান মুবারক প্রকাশ করেছেন এবং কায়িনাতের মাঝে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম ও সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক: উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন আরবের মধ্যে সবচেয়ে বড় সম্পদশালিনী। উনার মত সম্পদশালী আরবে আর কেউ ছিলো না। সমস্ত কুরাইশদের যত সম্পদ ছিলো উনার এককভাবে তার চেয়ে বেশি সম্পদ মুবারক ছিলো। সেই যামানায় উনার লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি টাকার ব্যবসা-বাণিজ্য ছিলো। কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, যেখানে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেখান থেকে সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ তাশরীফ মুবারক নেয়ার জন্য প্রতি সম্মানিত ক্বদম মুবারক-এর নিচে একটি করে সম্মানিত স্বর্ণের প্লেট মুবারক দেয়া হয়েছিলো। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বর্ণের প্লেট মুবারক-এ এক এক ক্বদম মুবারক রেখে সম্মানিত হুজরা শরীফ তাশরীফ মুবারক নিয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ! এখন যদি ৫০টা প্লেট ধরা হয়, আর প্রতিটি প্লেট যদি ৩ কেজি করে ধরা হয়। তাহলে দেখা যাচ্ছে ১৫০ কেজি স্বর্ণ, সম্মানতি নিসবতে আযীম শরীফ উনার সময় শুধু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ক্বদম মুবারক উনার নিচে তিনি বিছিয়ে দিয়েছেন। তাহলে উনার কতো সম্পদ ছিলো এবং কতো বেমেছালভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, সেটা সকলের চিন্তা-কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! যেই সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ হয়েছিলো, তিনি সেই হুজরা শরীফ রেখে উনার ভাতিজা হাকীম ইবনে হিজাম উনার থেকে একটা বাড়ি কিনে সেখানে তিনি চলে আসেন। সুবহানাল্লাহ! সেখানে তারশরীফ মুবারক নিয়ে বসবাস করেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক করা পর্যন্ত সেই সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ অবস্থান মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! আর পূর্বের যেই বাড়ি মুবারক ছিলো, সেইটা বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ উনার সময় উনাকে সম্মানিত হাদিয়া মুবারক করা হয়েছিলো। সুবহানাল্লাহ! সেই সম্মানিত বাড়ি মুবারক-এ যুন্ নূর সাইয়্যিদুনা হযরত আবুল আছ আলাইহিস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম উনারা সম্মানিত অবস্থান মুবারক করতেন। সুবহানাল্লাহ! উনার মত সম্পদশালিনী আরবে কিন্তু আর কেউ ছিলো না। সুবহানাল্লাহ! তিনি উনার সেই সমস্ত সম্পদ মুবারকগুলো সম্মানিত দ্বীন ইসলাম প্রকাশের পূর্বে এবং পরে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ বিলিয়ে দিয়েছিলেন। সুবহানাল্লাহ! তাহলে তিনি সম্মানিত ধন-সম্পদ মুবারক দিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতটুকু সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছিলেন, সেটা চিন্তা-ফিকিরের বিষয়। মানুষ কখনও সেটা চিন্তা-ফিকির করে মিলাতে পারবে না। সুবহানাল্লাহ! সেটাই নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, وَوَاسَتْنِي بِمَالِهَا إِذْ حَرَمَنِي النَّاسُ অর্থ: “মানুষ যখন আমার কোন সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়নি, তখন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি উনার সমস্ত মাল-সম্পদ দিয়ে আমার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন এবং আমাকে সান্তনা মুবারক দিয়েছেন।” (মুসনাদে আহমদ শরীফ) সম্মানিত ওহী মুবারক নাযিল হওয়ার পূর্বে নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ‘সম্মানিত হেরা গুহা মুবারক’-এ সম্মানিত অবস্থান মুবারক করতেন। তখন উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি সেখানে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য সম্মানিত খাবার মুবারক নিয়ে যেতেন। সুবহানাল্লাহ! ১৯৮৫ সালের কথা তখন এমনিতে স্বাভাবিকভাবে একজন সুস্থ-সবল ও যুবক লোকের জন্য হেরা গুহায় উঠতে প্রায় ২:৩০ থেকে ৩:০০ ঘন্টা সময় লাগতো এবং অনেক কষ্ট হতো। তাহলে ১৪০০ বৎসর আগে কি অবস্থা ছিলো? আর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক তো তখন অনেক ছিলো, তখন তিনি এই অবস্থায় কিভাবে, কতোটুকু ত্যাগ ও কষ্ট সহ্য করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু অলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ খাবার মুবারক নিয়ে গেছেন এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, সেটা চিন্তা ফিকিরের বিষয়। সুবহানাল্লাহ! তিনি আরবের মধ্যে সবচেয়ে সম্পদশালিনী ছিলেন। ইচ্ছা করলে অসংখ্য খাদিম নিয়োগ করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য ‘সম্মানিত হেরা গুহায় মুবারক’-এ সম্মানিত খাবার মুবারক পাঠিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি সেটা করেননি। তিনি উম্মুল মু’মিনীন আলাইহাস সালাম হওয়া সত্ত্বেও, উনার এতো অধিক বয়স মুবারক হওয়া সত্ত্বেও, তিনি সীমাহীন কষ্ট সহ্য করে সেই সুউচ্চ ‘সম্মানিত হেরা গুহা মুবারক-এ’ উঠে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য সম্মানিত খাবার মুবারক নিয়ে গেছেন এবং সেখানে গিয়ে উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! তাহলে তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কতো সীমাহীন মুহব্বত মুবারক করেছেন এবং কতো বেমেছালভাবে উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, তা সকলের চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! মূলত, তা কায়িনাতের বুকে এক নযীরবিহীন দৃষ্টান্ত মুবারক। কেউ এরূপভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়নি। তিনি ব্যতীত আর কারো পক্ষে এটা সম্ভবও হয়নি। সুবহানাল্লাহ! এক দিনের কথা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য ‘সম্মানিত হেরা গুহায়’ সম্মানিত খাবার মুবারক নিয়ে আসছিলেন, তখন স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজে উনার জন্য সুসংবাদ প্রেরণ করেন। যেটা সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে এসেছে, عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ أَتَى جِبْرِيلُ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ يَا رسولَ اللهِ هَذِهِ خَدِيجَةُ عليها السلام قَدْ أَتَتْ مَعَهَا إِنَاءٌ فِيهِ إِدام وَطَعَام فَإِذَا أَتَتْكَ فَاقْرَأْ عَلَيْهَا السَّلَامَ مِنْ رَبِّهَا وَمِنِّي وَبَشِّرْهَا بِبَيْتٍ فِي الْجَنَّةِ مِنْ قَصَبٍ لَا صَخَبَ فِيهِ وَلَا نَصَبَ . مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ অর্থ: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এই যে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি একটি পাত্র মুবারক নিয়ে আপনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক নিচ্ছেন। এই সম্মানিত পাত্র মুবারক-এ তরকারি মুবারক এবং খাদ্য মুবারক রয়েছেন। তিনি যখন আপনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক নিবেন, তখন আপনি উনাকে উনার রব মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে এবং আমার অর্থাৎ আমি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার পক্ষ থেকে সালাম জানাবেন। আর উনাকে সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার মধ্যে মুক্তাখচিত এমন একটি সম্মানিত প্রাসাদ তথা সম্মানিত বালাখানা মুবারক সম্পর্কে সুসংবাদ মুবারক প্রদান করবেন, যেখানে কোনো শোরগোল নেই, কোনো ক্লান্তি তথা কষ্ট-ক্লেশ নেই।” সুবহানাল্লাহ! (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ) তাহলে এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহিস সালাম তিনি কত বেমেছালভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন যে, উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ খুশি হয়ে স্বয়ং যিনি খ¦ালিক্ব রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকে সম্মানিত সালাম মুবারক জানিয়েছেন এবং উনাকে সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার সম্মানিত সুসংবাদ মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! শি’বে আবী ত্বালিবের কথা। যখন তিনি সেখানে তাশরীফ মুবারক নেন, তখন উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন, প্রায় ৬২ বছর। শি’বে আবী ত্বালিবে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের এরূপ অবস্থা হয়েছিলো যে, উনারা খাদ্য না পেয়ে গাছের লতা-পাতা, ছাল-বাকল পর্যন্ত খেয়েছিলেন। এমনকি উনারা চামড়ার না’লাঈন শরীফ (জুতা) পানিতে সিদ্ধ করে চিবিয়েছেন। গাছের লতা-পাতা, ছাল-বাকল খাওয়ার ফলে উনাদের ইস্তিঞ্জা মুবারক বকরীর লেদের মত হয়ে গিয়েছিলো। সুবহানাল্লাহ! ক্ষুধার্ত শিশু উনাদের কান্না মুবারক-এ আশে-পাশের লোকেরা রাতে ঘুমাতে পারতো না। এই কঠিন পরিস্থিতেও উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি শি’বে আবী ত্বালিবে ৩ বছর অবস্থান করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি তখন কখনো কখনো সম্মানিত মারীদ্বী শান (অসুস্থতা মুবারক) গ্রহণ করতেন এবং কখনো কখনো সম্মানিত ছিহ্হাতী শান (সুস্থতা মুবারক) গ্রহণ করতেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি কিন্তু অনেক সম্পদশালিনী ছিলেন, তিনি ইচ্ছা করলে পারতেন, শি’বে আবী ত্বালিবে না যেয়ে সুখ-শান্তিতে অবস্থান মুবারক করতে। কিন্তু তিনি সেটা করেননি। উনার এতো বয়স মুবারক হওয়া সত্ত্বেও তিনি শি’বে আবী ত্বালিবে দীর্ঘ ৩ বছর অবস্থান মুবারক করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন। সুবহাল্লাহ! তাহলে তিনি নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কতটুকু সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করেছেন, উনার তা’যীম-তাকরীম মুবারক করেছেন, উনার কতটুকু সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক বর্ণনা: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নবী-রসূল হিসেবে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হিসেবে এবং হাবীবুল্লাহ হিসেবে সৃষ্টি হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! দুনিয়াবী জেন্দগী মুবারক অনুযায়ী যখন উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ৪০ বছর, তখন আনুষ্ঠানিভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত-রিসালাত মুবারক প্রকাশ পায়। উনার উপর আনুষ্ঠানিভাবে সম্মানিত ওহী মুবারক নাযিল হয়। মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম তিনি (সম্মানিত হেরা গুহা মুবারক-এ) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সম্মানিত ওহী মুবারক নিয়ে আসেন। সুবহানাল্লাহ! এখন এই বিষয়টা উম্মতকে বুঝানোর জন্য নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত হেরা গুহা মুবারক থেকে সম্মানিত হুজরা শরীফ-এ এসে বিষয়টা উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার নিকট প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! এখন বিষয়টি অত্যন্ত কঠিন একটি বিষয়। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন এবং উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি একজন উম্মত। এখন বিষয়টা মানুষের জন্য বিশ্বাস করার বিষয় এবং ইস্তিক্বাম থাকার বিষয়। কিন্তু উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি বিষয়টা শুনার পর কোনো চিন্তিত হননি, বিচলিত হননি, কোনো প্রকার ঘাবড়াননি। তিনি অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবে নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম উনাকে এই বলেন সান্তনা মুবারক দিলেন যে, চিন্তার কোন কারণ নেই ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, এই বিষয়টা যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে আপনার উপর নাযিল করা হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! কারণ আপনার জন্য কোন দিন কোন খারাপী হবে না। আপনি তো সব সময় মানুষের উপকার করে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! ইত্যাদি ইত্যাদি নিজ থেকে বলে উল্টো তিনি সান্তনা মুবারক দিলেন। সুবহানাল্লাহ! এবং তিনি বিষয়টি তাছদীক্ব করার জন্য উনার সম্মানিত চাচাতো ভাই হযরত ওরাক্বাহ ইবনে নাওফিল রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু যিনি পূর্ববর্তী সম্মানিত আসমানী কিতাবের উপর অত্যন্ত দক্ষ ছিলেন উনার কাছে যাওয়ার প্রস্তাব মুবারক দিলেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি বললেন, চলুন, আমরা সেখানে যাই। মূলত, এটা হচ্ছে উম্মতকে শিক্ষা দেয়ার জন্য। সুবহানাল্লাহ! উনার সেখানে গেলেন। হযরত ওরাক্বাহ বিন নাওফিল রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত জবান মুবারক-এ বিষয়টি শুনে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বললেন, “যিনি আপনার নিকট এসেছেন তিনি হচ্ছেন হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম এবং আপনি হচ্ছেন আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুবহানাল্লাহ! কাজেই এটা সম্মানিত ওহী মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। আপনার নিকট আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত ওহী মুবারক নাযিল হয়েছে। সুবহানাল্লাহ! উম্মুল মু’মিনীন কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি বিষয়টা তাছদীক্ব করলেন। তিনি কিন্তু বিচলিত হতে পারতেন, চিন্তিত হতে পারতেন, ভয় পেতে পারতেন, অনেক কিছু করতে পারতেন। কিন্তু তিনি উল্টা বিষয়গুলো এতো স্বাভাবিকভাবের সাথে, ইতমিনানের সাথে তিনি গ্রহণ করলেন এবং জবাব দিলেন, যেটা ঠিক যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার যেন সরাসরি ক্বায়িম-মাক্বাম। সুবহানাল্লাহ! এটা অত্যন্ত সূক্ষ্ম বিষয়, ফিকিরের বিষয়। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কতো বেমেছালভাবে তা’যীম-তাকরীম করেছেন, উনার সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করেছেন, উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার সম্মানিত আনজাম মুবারক দিয়েছেন, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান তামাম-কায়িনাবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, عَنْ حَضْرَتْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ عَائِشَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ قَالَتْ بَيْنَا رَأْسُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي حِجْرِيْ لَيْلَةٍ ضَاحِيَةٍ إِذْ قُلْتُ يَا رَسُوْلَ اللهِ هَلْ يَكُوْنُ لِأَحَدٍ مِنَ الْحَسَنَاتِ عَدَدُ نُجُوْمِ السَّمَاءِ قَالَ نَعَمْ حَضْرَتْ عُمَرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ قُلْتُ فَأَيْنَ حَسَنَاتُ حَضْرَتْ أَبِي بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ قَالَ إِنَّمَا جَمِيْعُ حَسَنَاتِ حَضْرَتْ عُمَرَ عَلَيْهِ السَّلَامُ كَحَسَنَةٍ وَاحِدَةٍ مِنْ حَسَنَاتِ حَضْرَتْ أَبِي بَكْرٍ عَلَيْهِ السَّلَامُ. অর্থ: “উম্মুল মু’মিনী সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক জ্যোস্নার রাতে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমার কোল মুবারক-এ মাথা মুবারক রেখে শুয়ে ছিলেন। আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কারো কি আকাশের তারকার সপরিমাণ নেকী মুবারক রয়েছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম উনার আকাশের তারকার সমপরিমাণ নেকি মুবারক রয়েছে। সুবহানাল্লাহ! তখন আমি বললাম, তাহলে ছিদ্দীক্বে আকবর সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নেকী মুবারক উনার পরিমাণ কত? জবাবে নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার জিন্দেগীর সমস্ত নেকী মুবারক হচ্ছে, সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনার একখানা সম্মানিত নেকী মুবারক উনার সমান।” সুবহানাল্লাহ! (রযীন শরীফ, জামিউল উছূল শরীফ লিইবনে আছীর, মিশকাত শরীফ) আর তা হচ্ছে, আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া, ছিদ্দীক্বে আকবর সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক উনার সময় সম্মানিত সাওর গুহায় তিন দিন তিন রাত্রি নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দিয়ে যেই নেকী মুবারক অর্জন করেছিলেন, সেই সম্মানিত নেকী মুবারক। সেই সম্মানিত খিদমত মুবারকখানা হচ্ছেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার জিন্দেগীর সমস্ত নেকী মুবারক উনার সমান। সুবহানাল্লাহ! এখন বলার বিষয় হচ্ছে যে, যদি সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক উনার সময় সম্মানিত সাওর গুহায় তিন দিন তিন রাত্রি নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দিয়ে এতো বেমেছাল নেকী মুবারক অর্জন করেন যে, সেই সম্মানিত নেকী মুবারক সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার জিন্দেগীর সমস্ত নেকী মুবারক উনার সমান হয়। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি যে, একধারে ২৫ বছর বেমেছালভাবে সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম দিলেন, যার কোন মেছাল নেই, পৃথিবীর ইতিহাসে কারো পক্ষে এরূপ বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া হয়নি। তাহলে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত নেকী মুবারক পরিমাণ কতো সীমাহীন হবেন, সেটা জিন-ইনসানের চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, তা কেউ ভাষা দিয়ে প্রকাশ করতে পারবে? কস্মিনকালেও নয়। সুবহানাল্লাহ! যেটা সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, اِنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَمَّا اُسْرِىَ بِهٖ لَيْلَةَ الْمِعْرَاجِ اِلَى السَّمٰوَاتِ الْعُلـٰى وَوَصَلَ اِلَى الْعَرْشِ الْمُعَلّٰى اَرَادَ خَلْعَ نَعْلَيْهِ اَخْذًا مِّـنْ قَوْلِهٖ تَعَالـٰى لِسَيِّدِنَا حَضْرَتْ مُوسٰى عَلَيْهِ السَّلَامُ حِيْنَ كَلَّمَهٗ فَاخْلَعْ نَعْلَيْكَ اِنَّكَ بِالْوَادِ الْمُقَدَّسِ طُوًى. فَنُوْدِىَ مِنَ الْعَـلِـىِّ الْاَعْلـٰى يَا حَضْرَتْ مُـحَمَّدُ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَا تَـخْلَعْ نَعْلَيْكَ فَاِنَّ الْعَرْشَ يَتَشَرَّفُ بِقُدُوْمِكَ مُتَنَعِّـلًا وَّيَفْتَخِرُ عَلـٰى غَيْرِهٖ مُتَـبَـرِّكًـا فَصَعِدَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِلَى الْعَرْشِ وَفِىْ قَدَمَيْهِ النَّعْلَانِ وَحَصَلَ لَهٗ بِذٰلِكَ عِزٌّ وَّشَأْنٌ. অর্থ: “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত মি’রাজ শরীফ উনার রাতে সুউচ্চ সপ্ত আসমান অতিক্রম করে সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক উনার নিকটবর্তী হলেন, তখন তিনি উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলে সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক নেয়ার চিন্তা মুবারক করলেন। মহান আল্লাহ পাক উনার ওই বাণী মুবারক ফিকির করে, যেটা মহান আল্লাহ পাক তিনি (যখন সাইয়্যিদুনা হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি তূর পাহাড়ে মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে কথা বলার জন্য তাশরীফ মুবারক রাখবেন, তখন) হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেছিলেন, فَاخْلَعْ نَعْلَيْكَ اِنَّكَ بِالْوَادِ الْمُقَدَّسِ طُوًى. ‘আপনি আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ মুবারক খুলুন। কেননা আপনি সম্মানিত (তূর পাহাড়ের) পবিত্র তুয়া উপত্যকায় তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করতে যাচ্ছেন। (সেখানে আমার সম্মানিত আরশে আযীম থেকে ৭০ হাজার ভাগের এক ভাগ সম্মানিত নূর মুবারক পতিত হয়েছে। যার কারণে সেই স্থানটি সম্মানিত ও পবিত্র হয়ে গেছে। সুবহানাল্লাহ! তাই আপনি সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলে আসুন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এই বিষয়টি ফিকির করে উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলার চিন্তা করেছিলেন।) তখন মহান আল্লাহ পাক তিনি ওহী মুবারক করলেন, হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! দয়া করে আপনি আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলবেন না। অর্থাৎ আপনি আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফসহ আমার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক-এ তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করুন। কেননা আমার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনাদের পরশে, উনাদের ধূলি-বালি মুবারক উনাদের স্পর্শ মুবারক-এ ধন্য হবেন, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাছিল করবেন। সুবহানাল্লাহ! (শুধু তাই নয়,) আমার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক আপনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনাদের স্পর্শ মুবারক পাওয়ার কারণে, উনাদের ধূলি-বালি মুবারক লাভ করে বরকতময় হয়ে আরো পবিত্রতা হাছিল করবেন এবং অন্য সবার উপর ফখর করবেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত না’লাইন শরীফ পরিধান মুবারক করা অবস্থাতেই সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করলেন। আর সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ মুবারক উনাদের স্পর্শ মুবারক লাভ করে, উনাদের ধূলি-বালি মুবারক পেয়ে ইয্যত-সম্মান, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাছিল করলেন।” সুবাহানাল্লাহ! (ফাতহুল মুত‘য়াল ফী মাদহি খইরিন নি‘য়াল শরীফ) এখন বলার বিষয় হচ্ছে, হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন একজন জলীলুল ক্বদর নবী এবং রসূল। সুবহানাল্লাহ! যদি কিতাব হিসেবে ধরা হয়, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিষয়টি আলাদা। এছাড়া অন্যান্য সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে হযরত কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন প্রথম। সুবহানাল্লাহ! আর উনাকেই তূর পাহাড়ে যেতে হয়েছিলো উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলে। কেননা সেখানে সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক উনার সত্তর হাজার ভাগের এক ভাগ নূর মুবারক বর্ষিত হয়েছিলো বা যাহির হয়েছিল। অন্যদিকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সরাসরি স্পর্শ মুবারক পেয়েছেন উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ। আর সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনাদের স্পর্শ মুবারক পেয়েছে ধূলি-বালি। ফলে ধূলি-বালি এতো পবিত্রতা, ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক হাছিল করলেন যে, সম্মানিত মি’রাজ শরীফ উনার রজনীতে স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার মূল আরশে আযীম মুবারক সেই ধূলি-বালি মুবারক লাভ করার জন্য বেক্বারার-পেরেশান হয়ে গেলেন। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনাদের ধূলি-বালি মুবারক পেয়ে স্বয়ং আরশে আযীম মুবারক ধন্য হলেন, মর্যাদা-মর্তবা মুবারক হাছিল করলেন, সম্মানিত হলেন, বরকতময় হলেন এবং আরো পবিত্রতা হাছিল করলেন; এমনকি এই কারণে অন্য সকলের উপর ফখর করলেন। সুবহানাল্লাহ! যদি এই বিষয়টি এরূপ হয়, তাহলে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি যে একাধারে ২৫ বছর সরাসরি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ছোহবত মুবারক-এ থাকলেন, উনার সাথে অবস্থান মুবারক করলেন এবং বেমেছালভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিলেন, আর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সরাসরি স্পর্শ মুবারক-এ যে ধূলি-বালি এসেছেন, সেই ধূলি-বালি মুবারক উনাদের ফযীলত, মর্যাদা, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক ও পবিত্রতা মুবারক উনার হুকুম কী? অবশ্য অবশ্যই সেই ধূলি-বালি মুবারক উনাদের ফযীলত, মর্যাদা, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক ও পবিত্রতা মুবারকও আসমান-যমীন, সম্মানিত কা’বা শরীফ, সম্মানিত কুরসী শরীফ এবং মহান আল্লাহ পাক উনার আরশে আযীম মুবারক থেকেও লক্ষ-কোটিগুণ বেশি হবে। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনাদের ধূলি-বালি মুবারক পেয়ে সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক যেরূপ ধন্য হয়েছিলেন, মর্যাদা-মর্তবা হাছিল করেছিলেন, সম্মানিত হয়েছিলেন, বরকতময় হয়েছিলেন এবং আরো পবিত্রতা হাছিল করেছিলেন, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সরাসরি স্পর্শ মুবারক পেয়েছেন যে ‘ধূলি-বালি মুবারক’ সেই ধূলি-বালি মুবারক পেলেও মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক আরো লক্ষ-কোটি গুণ বেশি ধন্য হবেন, মর্যাদা-মর্তবা হাছিল করবেন, সম্মানিত হবেন, বরকতময় হবেন এবং পবিত্রতা হাছিল করবেন। সুবহানাল্লাহ! আরো স্পষ্টভাবে বলতে গেলে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনাদের ধূলি-বালি মুবারক পেয়ে সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক যেমনিভাবে আরো পবিত্রতা হাছিল করেছেন, সম্মানিত ও বরকতময় হয়েছেন এবং সকলের উপর ফখর করেছেন, তেমনিভাবে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ উনাদের সম্মানিত ধূলি-বালি মুবারক পেলেও সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক আরো পবিত্রতা হাছিল করবেন, সম্মানিত ও বরকতময় হয়ে যাবেন এবং সকলের উপর ফখর করবেন। সুবহানাল্লাহ! যদি তাই হয়, তাহলে উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল, সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! তিনি শুধু যিনি খ¦ালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া যত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক রয়েছে, সমস্ত কিছুর অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! এই বিষয়গুলো কিন্তু শুধু যাঁরা হাক্বীক্বী ঈমানদার একমাত্র উনারাই বুঝবেন, উপলব্ধি করবেন এবং বিনা চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বালে মেনে নিবেন। কিন্তু যারা মুনাফিক্ব তারা এই বিষয়গুলো কস্মিনকালেও বুঝবে না, উপলব্ধি করার তো প্রশ্নোই উঠে না; বরং নানা প্রকার চূ-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করবে। না‘ঊযুবিল্লাহ! এই প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, وَلِلَّهِ الْعِزَّةُ وَلِرَسُولِهِ وَلِلْمُؤْمِنِينَ وَلكِنَّ الْمُنَافِقِينَ لَا يَعْلَمُونَ অর্থ: “সমস্ত ইজ্জত তথা শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক একমাত্র যিনি খ¦ালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য, উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার (এবং উনার মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের জন্য,) এবং মু’মিনীন উনাদের জন্য। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু মুনাফিক্বরা তা জানে না, বুঝে না।” (সম্মানিত সূরা মুনাফিকূন শরীফ: সম্মানিত আয়াত শরীফ ৮) খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে ছহীহ সমঝ দান করুন। আমীন!
http://al-ihsan.net/FullText.aspx?subid=2&textid=14794

0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন