আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মাজার শরীফ
ফক্বীহুল উম্মত, মুহ্ইউস সুন্নাহ, ছহিবুল ইলম ওয়াল হিকাম, কুতুবুজ্জামান, ছহিবুল কাশফ ওয়াল কারামত, ফখরুল উলামা, সুলতানুল আরেফিন, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত মাওলানা আলহাজ্জ সাইয়্যিদ মুহম্মদ মুখলেছুর রহমান আলাইহিস সালাম। যিনি সারাবিশ্বে, কুল কায়িনাতে মহাসম্মানিত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম পরিচয়ে মশহুর। অর্থাৎ তিনি বর্তমান পঞ্চদশ হিজরী শতকের সুমহান মুজাদ্দিদ, সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মা, মুহইস সুন্নাহ, আওলাদে রসূল ঢাকা রাজারবাগ শরীফ উনার সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত আব্বাজান। সুবহানাল্লাহ!
তিনি ১৪১৯ হিজরী সন ১৩ই রবীউল আউওয়াল শরীফ তারিখে অর্থাৎ বর্তমান শাহরুল আ’যম, সাইয়্যিদুশ শুহর, পবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ উনার ১৩ শরীফে পবিত্র বিছালি শান মুবারক গ্রহণ করেন। উনার স্মরণে মহা তা’যীম-তাকরীম, ব্যাপক জওক-শওক এবং বহুমুখী ইবাদত বন্দেগী তথা পবিত্র ক্বাছীদা শরীফ, পবিত্র মীলাদ শরীফ এবং মকবুল মুনাজাত ও দোয়ার মাধ্যমে মহান এ দিনটি বিশেষভাবে পালিত হয়। সুবহানাল্লাহ!
ছহিবে কাশফ ওয়া কারামত, কুতুবুল ইরশাদ, আওলাদে রসূল হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার পূর্ব পুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্পর্কে ঐতিহাসিক সত্য হলো- পথভ্রষ্ট ও গুমরাহীতে নিমজ্জিত মানুষকে হিদায়েত দানের লক্ষ্যে সুলতানুল হিন্দ, হাবীবুল্লাহ, গরীবে নেওয়াজ হযরত খাজা মুঈনুদ্দীন চিশতী সানজিরী আলাইহিস সালাম তিনি বিভিন্ন দেশ হিজরত ও সফরের শেষ পর্যায়ে মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশে ৫৬১ হিজরীতে আজমীর শরীফ-এ আসেন। উনারই অন্তরঙ্গ সঙ্গী হিসেবে ওই যামানায় মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ ওলী হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ আবূ বকর মুজাদ্দিদী আলাইহিস সালাম তিনিও একই লক্ষ্যে আরব থেকে আজমীর শরীফ-এ তাশরীফ আনেন। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রচারে কাজে নিমগ্ন হয়ে তিনি আজমীর শরীফ-এ থেকে যান এবং সেখানেই বিছালি শান মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ!
উনারই অধস্তন পুরুষ হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ আলাউদ্দীন আলাইহিস সালাম ও হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ সালাহ উদ্দীন আলাইহিস সালাম উনারা এগারশত হিজরী শতকের শেষার্ধে হিদায়েত উনার আলো নিয়ে চট্টগ্রাম আগমণ করেন। উনারা ছিলেন দুই ভাই। সেখানে সাময়িক অবস্থানের পর উনারা দু’জনই বর্তমান নূরানীগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) জেলার সোনারগাঁও-এ তাশরীফ আনেন। সুবহানাল্লাহ!
হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ সালাহ উদ্দীন আলাইহিস সালাম তিনি সোনারগাঁও-এ অবস্থান করেন এবং সেখানেই হিদায়েত উনার কাজে ব্যাপৃত থাকেন এবং বিছালী শান মুবারক গ্রহণ করেন। হযরত সাইয়্যিদ মুহম্মদ আলাউদ্দীন আলাইহিস সালাম তিনি সোনারগাঁও-এ এসে অল্প কিছুদিন অবস্থানের পর একই জেলার আড়াইহাজার থানাধীন যে জনপদে হিদায়েত উনার কেন্দ্রভূমি গড়ে তোলেন, তার বর্তমান নাম প্রভাকরদী শরীফ। উনাদেরই মুবারক সিলসিলা উনার ধারক বাহক হলেন, হিজরী পঞ্চদশ শতকের মুজাদ্দিদ ও ইমাম, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামে আ’যম, হাবীবে আ’যম, ইমামুল উমাম সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ!
মুসতাজাবুদ দাওয়াত, ছহিবে কাশফ ওয়া করামত, কুতুবুল ইরশাদ, আওলাদে রসূল হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার বরকতময় জীবন মুবারক ছিলো সীমাহীন মর্যাদাম-িত, তাৎপর্যপূর্ণ, বরকতময় ও কারামতে ভরপুর। জীবনের একটি অংশ তিনি ভারতের দার্জিলিং পাহাড়ে অনেক বছর যাবত কঠোর রিয়াজত-মাশাক্কাতে কাটিয়েছেন।
আওলাদে রসূল হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি ১৯৬৭ ঈসায়ী সালে পবিত্র হজ্জ সম্পন্ন করে রওজায়ে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জিয়ারত মুবারক উনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। পবিত্র মসজিদে নববী শরীফ উনার মধ্যে নামাজান্তে যখন সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক দিদারের আকাঙ্খায় ব্যাকুল ছিলেন, সেই মহাক্ষণে তিনি দেখতে পান মাশুকে মাওলা, ছহিবে খুলুকীন আ’যীম, সাইয়্যিদুল কাওনাইন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে। সাথে হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম ও হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম। প্রত্যাশা পূরণের পরম মুহূর্তে আদব ও বিনয়ের সাথে তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কদমবুছি করলেন, উনার কপাল মুবারক-এ চুমু খেলেন। এবং অন্তরের অন্তস্থল থেকে আরজু জানালেন, “ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! দয়া করে, ইহসান করে আমাকে কবুল করুন, আমাকে পূর্ণ করুন, কামিয়াব করুন।”
সারওয়ারে কায়িনাত, রওফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার প্রিয়তম আওলাদ উনাকে কাছে টেনে নিলেন। জড়িয়ে ধরলেন এবং বললেন, ‘আপনি আমার আশিক’ আপনি পরিপূর্ণ, আপনি কামিয়াব।” সুবহানাল্লাহ! পরে কুতুবুল ইরশাদ, আওলাদে রসূল হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম ও হযরত ফারুক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাদেরকে কদমবুছি করলেন। উনারাও এই পরম মুহূর্তে মুবারকবাদ জানালেন এবং স্বীকৃতি দান করলেন। সুবহানাল্লাহ!
বিশেষভাবে উল্লেখ্য, মুসতাজাবুদ দাওয়াত, ছহিবে কাশফ ওয়া কারামত, কুতুবুল ইরশাদ, আওলাদে রসূল হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার সবচেয়ে বড় কারামত মুবারক হলেন, উনার সুযোগ্য আওলাদ, জামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, জামানার লক্ষ্যস্থল আওলাদে রসূল, জামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনাকে যমীনে রেখে গেছেন। তিনি আজীবন মুবারক আওলাদ হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার খিদমতের আঞ্জাম দেয়ার কোশেশ করে গেছেন। মুবারক আওলাদ, উনার সুমহান মাক্বাম সম্পর্কে তিনি ছিলেন সম্যক অবগত। কেননা তিনি আজমীর শরীফ-এ হযরত খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার যিয়ারত শেষে, হযরত খাজা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দেয়া হাদিয়া পাগড়ী মুবারক উনার সুযোগ্য আওলাদ, জামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, রাহবারে আ’যম, গাউছুল আ’যম, সুলতানুল আউলিয়া, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার জন্য তিনি নিজেই নিয়ে এসেছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
আজীবন মুসতাজাবুদ দাওয়াত, ছহিবে কাশফ ওয়া কারামত, কুতুবুল ইরশাদ, আওলাদে রসূল হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি পিতা হয়েও হযরত মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার সম্মানে দাঁড়িয়ে যেতেন, উনাকে ইস্তেকবাল জানাতেন, উপস্থিত সকলকে দাঁড়ানোর জন্য আদেশ করতেন। সুবহানাল্লাহ!
যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, রাহবারে আ’যম, গাউছুল আ’যম, সুলতানুল আউলিয়া, সাইয়্যিদুনা মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার জন্য হাবীবে খোদা, মাশুকে মাওলা, রউফুর রহীম, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নির্দেশে তিনি রাজারবাগ শরীফ উনার মধ্যে পবিত্র খানকা শরীফ তৈরী করে দেন। উনার তাজদীদী কার্যক্রম, খিলাফতী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মসজিদ-মাদরাসার জন্য আলাদাভাবে জায়গা ওয়াকফ করে দেন। সুবহানাল্লাহ!
প্রসঙ্গত: আমভাবে একটি মশহুর পবিত্র হাদীছ শরীফই ফক্বীহুল উম্মত, কুতুবুল ইরশাদ সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার ফাযায়িল-ফযীলত অনুধাবনের জন্য যথেষ্ট। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে- “যিনি ইলম শিক্ষা করলেন, সে অনুযায়ী আমল করলেন উনার সম্মানার্থে উনার পিতামাতাকে হাশরের ময়দানে সম্মানস্বরূপ এমন এক টুপী প্রদান করা হবে যার উজ্জলতা সূর্যের আলোর চেয়েও বহুগুণ বেশী হবে।” সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ উনারা শুধু জান্নাতিই হবেননা, মহা সম্মানিত জান্নাতিই হবেন।
তবে এটা যদি হয় সাধারণ আলিমের পিতা-মাতার ফযীলতের কথা তাহলে যিনি মুজাদ্দিদে আ’যম, যিনি লুপ্তপ্রায় সব সুন্নতের জিন্দাকারী, যিনি পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার জিন্দাকারী, যাঁর উসীলায় প্রতি মুহুর্তে শুধু লক্ষ-কোটি হক্ব আলিম নয় বরং হক্কানী-রব্বানী আলা দরজার ওলীআল্লাহ তৈরী হন; তাহলে সেই মহান ব্যক্তিত্ব, যিনি মুজাদ্দিদে আ’যম উনার পিতা-মাতা উনাদের তাহলে কী ফাযায়িল-ফযীলত থাকতে পারে। মূলত: এটা অকল্পনীয়, অব্যক্ত ভাষায় প্রকাশের অযোগ্য।
মূলত: উনারা শুধু মহা সম্মানিত জান্নাতীই নন বরং উনারা এমন অযুদ মুবারক-এর অধিকারী, যাঁদের জন্য জান্নাত ব্যাকুল হয়ে, অধীর আগ্রহে প্রতীক্ষা করছে, যাদের তাশরীফে জান্নাত নিজেই সম্মানিত হয়ে যায়। বলাবাহুল্য উনারা এ সম্মানের চেয়েও মহামর্যাদাবান। এ মর্যাদা উনাদের অর্জন। উনাদের শান। উনাদের বৈশিষ্ট্য। উনারা শরহে সুদূরের কারণে কখনও মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে শুধু সন্তান হিসেবে দেখেননি। সব সময়ই দেখেছেন মুজাদ্দিদে আ’যম হিসেবে। যে কারণে উনি স্বয়ং পিতা হয়েও সম্বোধন করতেন ‘হুযূর ক্বিবলা বা মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম বলে’। সুবহানাল্লাহ!
সঙ্গতকারণেই উম্মাহর জন্য ফরয-ওয়াজিব- কুতুবুজ্জামান, ছহিবুল ইলম ওয়াল হিকাম, ছহিবুল কাশফ ওয়াল কারামত, ছহিবুত তাক্বওয়া, ফখরুল উলামা, আওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত দাদা হুযূর ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার মা’রিফাত অর্জন করা উনাকে মুহব্বত করা। তা’যীম-তাকরীম করা। অনন্তকাল উনার শান মান আলোচনা করা। উনার সম্মানার্থে নেক কাজ করা আর্থিক নেক কাজ করা এবং সমূহ হক্ব আদায় করা।
http://al-ihsan.net/FullText.aspx?subid=5&textid=76692
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন