যেই আবু লাহাবের ধ্বংসের জন্য পবিত্র সূরা লাহাব শরীফ নাযিল হলো, সেই আবু লাহাব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য, উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উনার খুশি প্রকাশ করার কারণে জাহান্নামী হওয়ার পরও বিশেষ নিয়ামত পাচ্ছে।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মহান আল্লাহ পাক উনার নবী ও রসূল হিসেবে জ্ঞান করে না হলেও শুধু আপন ভ্রাতুষ্পুত্র হিসেবে উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উনার সুমহান দিনে খুশি প্রকাশ করায় অর্থাৎ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত মহান আমলটি করায় কাট্টা কাফির ও চিরজাহান্নামী আবু লাহাব জাহান্নামের মধ্যেও প্রতি ইছনাইনিল আযীম শরীফ অর্থাৎ (সোমবার)- দিন বিশেষ সমাদর পেয়ে থাকে। সুবহানাল্লাহ!
তাহলে একজন ঈমানদার ব্যক্তি খুশি প্রকাশ করলে কতটুকু ফায়দা লাভ করবে তা বলার অপেক্ষাই রাখে না।
অথবা কিছু নামধারী মুফতী, মাওলানা, মুহাদ্দিছ, মুফাসসির, শায়খুল হাদীছ, শায়খুত তাফসীর, মুফাসসিরে কুরআন গং পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ব্যাঙ্গ “লাহাবী উৎসব” বলে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ!
আবু লাহাব কিন্তু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ-এ হাবীবুল্লাহ হিসেবে, হযরত নবী-রসূল আলাইহিস সালাম হিসেবে খুশি প্রকাশ করেনি। সে খুশি প্রকাশ করেছিল তার ভ্রাতুষ্পুত্র হিসেবে।
কারণ তৎকালে আরব দেশে শিশুপুত্র জম্ম গ্রহণ গর্বের বিষয় ছিল আর মেয়ে শিশু জম্ম নিলে তাকে জীবন্ত কবর দেয়া হতো।
তাহলে চিন্তা ও ফিকিরের বিষয়, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শানে যদি সে বেয়াদবী করে পবিত্র সূরা লাহাব শরীফ নাযিল না করাতো বা যদি সে ঈমানদার হয়ে যেত, তাহলে সে হতে পারতো কুল-কায়িনাতের জন্য মহানতম আমলটির অগ্রদূত বা পথিকৃত।
যার ফলশ্রুতিতে তার চেয়ে বুযূর্গ কোনো ব্যক্তি হতে পারতো না, কেননা সে যেহেতু পথিকৃত হিসেবে পরিগণিত হতো, তখন যে বা যারাই উক্ত খুশি প্রকাশের মহানতম আমলটি করতো তাদের সে আমলের হিস্যা তার আমলনামায় লিপিবদ্ধ হয়ে যেত। ফলে আবু লাহাবের আমলনামায় পুঞ্জিভূত নেকীর সমান নেকী ক্বিয়ামত পর্যন্ত কেউই হাছিল করতে পারতো না।
বিষয়টি যদি এমনই হয়, তাহলে যে বা যারা জেনে ও বুঝে অর্থাৎ উম্মতে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা এই মহানতম আমলটি উদযাপন করে থাকেন উনাদেরকে মহান আল্লাহ পাক তিনি ও উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা কতটুকু নৈকট্য দান করবেন তা মানুষের চিন্তা ও ফিকিরের বাইরে।
তাহলে এখন প্রশ্ন, আবু লাহাব খুশি প্রকাশ করার কারণে যদি কোনো মুসলমান খুশি প্রকাশ করতে না পারে,
তাহলে যদি কোনো কাফির দাড়ি রাখে তাহলে কি মুসলমান দাড়ি ফেলে দিবে?
গিরিশ চন্দ্র পবিত্র কুরআন শরীফ অনুবাদ করেছিল বলে মুসলমান কুরআন শরীফ অনুবাদ করবে না?
ইবলিস শয়তান নামায পড়েছিল বলে মুসলমান নামায ছেড়ে দিবে?
বরং মুসলমান যে বিষয়টি শরীয়তসম্মত সেই বিষয়টি পালন করবে তা ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরা পালন করলেও।
মূলত, যাদের অন্তর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বতের পরিবর্তে কাট্টা কাফির আবু লাহাবের মুহব্বতে পরিপূর্ণ, তারাই কেবল পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে লাহাবী উৎসব বলতে পারে। এ জন্য আরবীতে প্রবাদ আছে, ‘পাত্রে আছে যা, ঢাললে পড়বে তা।’

0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন