সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস আলাইহিস্ সালাম তিনি পবিত্র ক্বদরিয়া তরীক্বা উনার অন্যতম কা-ারী।
আবার পবিত্র নকশবন্দিয়ায়ে মুজাদ্দিদিয়া তরীক্বাও উনারই মুবারক উসীলায় শক্তিশালী হয়েছে।
বলা হয়, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস আলাইহিস্ সালাম তিনি হচ্ছেন জামিউন নিসবত।
পবিত্র কা¡দরিয়া তরীক্বা এবং পবিত্র নকশবন্দিয়ায়ে মুজাদ্দিদিয়া ত্বরীক্বা উনাদের পৃথক পৃথক শাজরা শরীফ উনার মাঝে একত্রিত হয়েছে।
পবিত্র ক্বাদরিয়া তরীক্বা হযরত র্কারামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস্ সালাম উনার থেকে শুরু হয়ে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী আলাইহিস সালাম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ্ আলাইহিস সালাম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুর রবি’ আলাইহিস্ সালাম এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল খমিছ্ আলাইহিস্ সালাম উনাদের থেকে পর্যায়ক্রমে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস আলাইহিস সালাম উনার নিকট পৌছে। অপর দিকে পবিত্র নকশবন্দিয়ায়ে মুজাদ্দিদিয়া তরীক্বা হযরত ছিদ্দিক্বে আকবর আলাইহিস্ সালাম উনার থেকে শুরু হয়ে হযরত সালমান ফারসী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, হযরত ক্বাসিম বিন হযরত মুহম্মদ বিন আবূ বকর রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাদের থেকে পর্যায়ক্রমে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস আলাইহিস্ সালাম উনার নিকট পৌঁছেছে।
অর্থাৎ, দু’খানা পৃথক ধারাবাহিকতা সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস আলাইহিস্ সালাম উনার মাধ্যমে একত্রিত হয়ে যায়। (সুবহানাল্লাহ)
নিম্নে এ বিষয়টি এক নজরে দেখানো হলো-
নক্শবন্দিয়ায়ে মুজাদ্দিদিয়া ত্বরীক্বা ::: ক্বাদিরিয়া তরীক্বা
ছাহিবে জামিউল আসমা ওয়াছ ছিফাত, আকরামুল আওওয়ালীন ওয়াল আখিরীন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, সাইয়্যিদুনা হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
খলীফাতু রসূলিল্লাহ, আরহামু উম্মাতিন নাবিইয়ি, আফদ্বালুন নাস বা’দাল আম্বিয়া সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব আলাইহিস সালাম। ::: বাবুল ইলমি ওয়াল হিকমাহ, আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম।
ছাহিবু রসূলিল্লাহ হযরত সালমান ফারসী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। ::: সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, আমীরুল মু’মিনীন, খলীফাতুল মুসলিমীন, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম।
সাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ, শহীদে কারবালা, সাইয়্যিদুশ শুহাদা, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম।
হযরত ইমাম ক্বাসিম বিন মুহম্মদ বিন আবূ বকর রহমতুল্লাহি আলাইহি। ::: ইমামুল মুহাক্বক্বিক্বীন, আল ইমামুর রবি’ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম যাইনুল আবিদীন আলাইহিস সালাম।
ইমামুল হুদা, ইমামু আহলিল ইয়াক্বীন, ইমামুল খামিস, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম বাকির আলাইহিস সালাম।
হযরত ইমাম জা’ফর ছাদিক্ব আলাইহিস সালাম।
হযরত ইমাম মূসা কাযিম আলাইহিস সালাম।
হযরত ইমাম আলী রিযা আলাইহিস সালাম।
হযরত শায়েখ মা’রূফ কারখী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
হযরত শায়েখ আবুল হাসান সাররী সাকতী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
হযরত খাজা সাইয়্যিদুত ত্বায়িফা জুনায়িদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
হযরত আবূ আলী রোদবারী রহমতুল্লাহি আলাইহি। হযরত শায়খ আবূ বকর শিবলী রহমতুল্লাহি আলাইহি।
পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক মানুষ মুসলমান।
দুই-তৃতীয়াংশ মুসলমান পবিত্র হানাফী মাযহাব উনার অনুসারী। ইমামে আ’যম হযরত আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাধ্যমেই পবিত্র হানাফী মাযহাব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই মাযহাব ক্বিয়ামত পর্যন্ত জারি থাকবে। ক্বিয়ামতের পূর্বে হযরত ঈসা রুহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি তাশরীফ মুবারক আনবেন। তিনি ইজতিহাদ করে ফিক্বহী মাসয়ালা-মাসায়িল সম্পন্ন করবেন। তখন উনার মুবারক ইজতিহাদের সাথে ইমামে আ’যম হযরত আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ইজতিহাদ তথা হানাফী মাযহাব মিলে যাবে। সুবহানাল্লাহ!
ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার কামালিয়াত হাছিল এবং হানাফী মাযহাব প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে হযরত ইমামুস সাদিস আলাইহিস্ সালাম উনার মুবারক মদদই মূল শক্তি। ইমামে আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি নিজেই বলেন-
لولا سنتان لهلك ابو نعمان
অর্থ: যদি দুটি বছর না হতো, তাহলে ইমামে আ’যম হযরত আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ধ্বংস হয়ে যেতেন।
কোন সেই দুটি বছর?
যেই ২ বছর তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস আলাইহিস সালাম উনার ছোহবত লাভ করে উনার গাইবী মদদ, ফয়েয-তাওয়াজ্জুহ হাছিল করেছেন। (সুবহানাল্লাহ)
আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের মূলে রসায়ন শাস্ত্র।
রসায়ন শাস্ত্রের জনক হিসেবে খ্যাত হযরত জাবির ইবনে হাইয়ান রহমতুল্লাহি আলাইহি।
তিনি সরাসরি হযরত ইমামুস সাদিস আলাইহিস সালাম উনার মুবারক তা’লীম নিয়েই এই শাস্ত্রে বুৎপত্তি লাভ করেন।
অনুরূপভাবে আলোক বিজ্ঞানী ইবনুল হাইছাম, জ্যোতিবিজ্ঞানী আল বিরুনী, গণিতবিদ আল জাবেরসহ অনেকে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে হযরত ইমামুস সাদিস আলাইহিস সালাম উনার তা’লীম মুবারক নিয়ে, উনার ক্বওল শরীফ নিয়ে গবেষণা করে স্বীয় গবেষণায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন।
তাই এ কথা সুস্পষ্ট যে, আধুনিক বিজ্ঞান হযরত ইমামুস সাদিস আলাইহিস সালাম উনার নিকট ঋণী।
অন্য কথায়, হযরত ইমামুস সাদিস আলাইহিস্ সালাম তিনি জ্ঞান-বিজ্ঞান সম্প্রসারণে পৃষ্ঠপোষক ও মদদদাতা।
বলাবাহুল্য যে, হযরত ইমামুস সাদিস আলাইহিস্ সালাম উনার বিশেষ খুছূছিয়ত মুবারক হলো জ্ঞান-বিজ্ঞানে পৃষ্ঠপোষকতা করা।
উনার এই বিশেষ খুছূছিয়ত মুবারকে বৈশিষ্ট্যমন্ডিত হয়েছেন উনারই প্রিয় আওলাদ মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস্ সালাম এবং ক্বায়িম-মাক্বাম মুজাদ্দিদে আ’যম হযরত খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম উনারা।
বর্তমান সময়ে উনারাও জ্ঞান-বিজ্ঞানে পৃষ্ঠপোষকতা মুবারক করছেন।
কাফিরদের বিভিন্ন ভ্রান্তি সংশোধন করছেন।
নতুন নতুন ধারণা মুবারক প্রদান করছেন।
যেমন, অমাবস্যার চাঁদকে ঘবি গড়ড়হ বলে ভ্রান্তি ছড়ানো হতো।
গ্রীনীচ মিন টাইম অনুসরণের মাধ্যমে মুসলমানদেরকে লক্ষ্যচ্যুত করা হতো।
বিধায়, মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি অমাবস্যার চাঁদের নাম ঘবি গড়ড়হ থেকে তবৎড় গড়ড়হ এ পরিবর্তন করেন। গ্রীনীচ মিন টাইম এর পরিবর্তে “ কা’বা শরীফ মিন টাইম” প্রবর্তন করেন।
অপরদিকে খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম তিনি কাফিরদের কুফরীমূলক ক্যালেন্ডারের বিকল্পস্বরূপ শরীয়ত সম্মত “শামসী ক্যালেন্ডার” প্রবর্তন করেন।
প্রচলিত গাণিতিক অনেক ভ্রান্ত সূত্র সংশোধন করেন।
সর্বপোরি বিজ্ঞানে মুসলিম অবদান সম্পর্কে তিনিই মুসলিম উম্মাহকে সজাগ ও সচেতন করেন।
কাজেই, যাবতীয় ইলম সম্প্রসারণে পৃষ্ঠপোষক সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুস সাদিস আলাইহিস সালাম, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল উমাম আলাইহিস সালাম, সাইয়্যিদুনা হযরত খলীফাতুল উমাম আলাইহিস সালাম। উনাদের নিসবত হাছিল করে ইলমে বুৎপত্তি অর্জন করা সকলের দায়িত্ব-কর্তব্য, মহান আল্লাহ পাক তিনি সকলকে তাওফীক্ব দান করুন। আমীন।


0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন