728x90 AdSpace

  • Latest News

    বিজ্ঞানে মুসলমানগণ উনাদের অবদান কিভাবে চুরি হয়েছিলো ? কেনো চুরি হয়েছিলো ? (২ )


    (পূর্ব প্রকাশিতের পর)
    ভারতবর্ষের মুসলিম লাইব্রেরীসমূহ লুট করার ইতিহাস ঃ এর আগের পর্বে আলোচনা করা হয়েছে স্পেনের মুসলিম লাইব্রেরীসমূহ লুট করার ইতিহাস। এই পর্বে ভারতবর্ষের মুসলিম লাইব্রেরীসমূহ লুট করার ও এ অঞ্চল থেকে বিজ্ঞানের অবদানসমূহ চুরি করার ইতিহাস আলোচনা করা হবে ।
    হযরত টিপু সুলতান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার বিশাল লাইব্রেরী লুটঃ মহীশূরের শাসক হযরত টিপু সুলতান রহমতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন রকেট বিজ্ঞানের জনক । তিনি সর্বপ্রথম উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ধাতব রকেট তৈরী করেন এবং তা কয়েক মাইল পর্যন্ত প্রেরণ করতে সক্ষম হন । উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রকেটের গ্যাসের চাপ সহ্য করার জন্য রকেটের খোলস ধাতব পদার্থের হতে হবে , এটি তিনিই আবিস্কার করেছিলেন ।
    ১৭৯৯ ঈসায়ীতে হযরত টিপু সুলতান রহমতুল্লাহি আলাইহি ব্রিটিশদের সাথে যুদ্ধে শহীদ হওয়ার পরপরই ব্রিটিশরা উনার বিশাল লাইব্রেরী লুট করে । সেসব লুটকৃত গ্রন্থরাজির এক অংশ পাঠানো হয় কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটিতে, আরেক অংশ পাঠানো হয় কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে ।
    ব্রিটিশরা হযরত টিপু সুলতান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার রকেট প্রযুক্তি চুরি করে তা ফ্রান্সের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করে সফলতা লাভ করেছিলো ।
    মুসলমান শাসকদের রাজধানী দিল্লী লাইব্রেরীর বিশাল সংগ্রহ লুটঃ ব্রিটিশরা তাদের সবচেয়ে ভয়াবহ লুন্ঠন চালিয়েছিলো ১৮৫৭’র ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা যুদ্ধের পর । এই যুদ্ধে মুসলমান শাসকদের রাজধানী দিল্লী শহরটিকে সম্পূর্ণ গুড়িয়ে দেয়া হয়, যেই দিল্লী শহর ছিলো জ্ঞানবিজ্ঞান চর্চার একটি প্রধান কেন্দ্র । এই দিল্লী শহরে মুসলমানগণ উনাদের উপর যে গণহত্যা চালানো হয়েছিলো, তার নজীর বিশ্বে বিরল ।
    বর্তমানে এ অঞ্চলের মুসলমানরা সেই ইতিহাস জানে না, জানে না তাদের পূর্বপুরুষদের কীর্তিসমূহ । মুসলমান উনাদের উপর ব্রিটিশদের জুলুম-নির্যাতন এবং মুসলমান উনাদের কিতাবাদি চুরি ও লুট করার একটি ঘটনা ইতিহাসে পাওয়া যায় , নিম্মে দেয়া হলো ঃ
    ব্রিটিশরা মুসলমানগণ উনাদের কাছ থেকে যেসব কিতাবাদি লুট করেছিলো, সেগুলো তাদের বিভিন্ন হাতে হাতে ছড়িয়ে পড়েছিলো । আন্দামানের জেলের ব্রিটিশ জেলপ্রধানের নিকটেও ছিলো ফারসী ভাষায় রচিত ভারতীয় মুসলিম জ্যোতির্বিজ্ঞানের একটি কিতাব । ইংরেজ জেলার সেই কিতাবের অর্থ বুঝতে সক্ষম ছিলো না।
    তখন সেই ইংরেজ জেলার আন্দামান জেলে বন্দী এক মুসলিম আলিমের নিকট বইটি দেয় । সেই আলিম জানতেন, হযরত ফযলে হক খায়রাবাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি পড়াশোনা করতে ভালোবাসেন । আন্দামানে তিনি বইপত্রের সংস্পর্শে না থাকার কারণে অত্যন্ত মনোকষ্টে ভুগছেন । তাই তিনি বইটি হযরত ফযলে হক খায়রাবাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে দেন ।
    হযরত ফযলে হক খায়রাবাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি অত্যন্ত যত্নের সাথে উক্ত জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ক বইটির ব্যাখ্যা ও টীকা লিখে দেন। ইংরেজ জেলার তা পড়ে এতো মুগ্ধ হয় যে, সাথে সাথে সে হযরত ফযলে হক খায়রাবাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে দেখার জন্য ব্যারাকে ছুটে আসে ।
    পরবর্তীতে সেই ইংরেজ জেলারই ব্রিটিশ সরকারের নিকট আবেদন করে উনাকে মুক্তি দেয়ার জন্য। হযরত ফযলে হক খায়রাবাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ছেলে উনার মুক্তিনামা নিয়ে আন্দামানে ছুটে যান, কিন্তু গিয়ে দেখতে পান তার পিতা বিছালী শান মুবারক গ্রহণ করেছেন।
    হযরত ফযলে হক খায়রাবাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি ছিলেন দিল্লীর একজন প্রধান জ্ঞানী ব্যক্তি । তিনি ছিলেন হযরত আবদুল আযীয মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার ছাত্র । সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান হযরত ফযলে হক খায়রাবাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে ব্রিটিশ বিরোধিতার দায়ে আন্দামানে নির্বাসিত করা হয় । উনার পুরুষানুক্রমে সঞ্চিত পারিবারিক লাইব্রেরীর বিশাল সংগ্রহ লুট করা হয়। আন্দামানে উনাকে নির্মম যুলুম নির্যাতন করে খ্রিস্টানরা ।
    হযরত ফযলে হক খায়রাবাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনি যেই টীকা ও ব্যাখ্যা লিখে দিয়েছিলেন, সেগুলোর কী হয়েছিল ? খ্রিস্টানরা উনার কাছ থেকে তা শিখে নিয়ে নিজেদের নামেই চালিয়ে দিয়েছিলো । মুসলমানগণ উনাদের নিকট থেকে কাফির-মুশরিকরা যে কতোভাবে বিজ্ঞানের অবদান চুরি করেছে, তা স্বল্প পরিসরে বলে বোঝানো সম্ভব নয় । কিন্তু ইতিহাস অনুযায়ী তাদের চুরির রাস্তা কিন্তু একটিই । তা হলো , মুসলমানগণ উনাদের লাইব্রেরীগুলো লুট করা ।
    কাফির-মুশরিকরা লাইব্রেরীগুলো লুট করতে পেরেছিলো কেনঃ কাফির-মুশরিকরা লাইব্রেরীগুলো লুট করতে পেরেছিলো, কারণ মুসলমানরা কাফির-মুশরিকদের বন্ধু বলে মনে করা শুরু করেছিলো । নাউযুবিল্লাহ ! স্পেনের মুসলিম শাসনের পতন ও লাইব্রেরীগুলো লুন্ঠিত হয়েছিলো খ্রিস্টানদের বন্ধু বলে মনে করার কারণে , আর ভারতবর্ষের মুসলিম শাসনের পতন ও লাইব্রেরীগুলো ধ্বংস হয়েছিলো হিন্দুদেরকে আস্থাভাজন মনে করার কারনে ।
    ভারতীয় মুসলমান শাসকদের হিন্দুপ্রীতি নিয়ে বেশি কিছু বলার নেই । ইতিহাসের পাতায় বারবার এ অঞ্চলের মুসলমানরা হিন্দুদের বিশ্বাস করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং হয়ে যাচ্ছে ।
    ১৮৫৭ ঈসায়ীতে ব্রিটিশবিরোধী যুদ্ধের সময়ে দিল্লীর শেষ মোগল বাদশাহ বাহাদুর শাহ জাফর, হিন্দুদের কাছে টানার জন্য কুরবানীতে গরু জবাই পর্যন্ত নিষেধ করে দিয়েছিলো । নাউযুবিল্লাহ !
    কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি, কারণ দিল্লী দখল করার পর ব্রিটিশদের সহযোগী হিসেবে হিন্দুরা দিল্লীর নিয়ন্ত্রণ নেয়। মূলত হিন্দুরা শুরু থেকেই দিল্লী শহরের মধ্যে বসে ব্রিটিশদের সাথে আঁতাত করে চলেছিলো । ব্রিটিশ গবেষক উইলিয়াম ড্যালরিম্পেল এ প্রসঙ্গে তার ‘দি লাস্ট মোগল’ বইতে উল্লেখ করেছে- “মোগল দরবারের অস্তিত্ব না থাকায় সংস্কৃতি ও শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে নগরীর খ্যাতিও বিদায় নিয়েছিলো । গ্রন্থাগারগুলো লুন্ঠিত হয়েছিলো, মুল্যবান পান্ডুলিপিগুলো আর ছিলো না । প্রায় সব গুলো মাদ্রাসা (উল্লেখ্য , একমাত্র দিল্লী শহরকে কেন্দ্র করে লক্ষাধিক মাদ্রাসা ছিলো) এবং মাদ্রাসা ভবনগুলোও হিন্দুদের নিকট বিক্রি হয়ে গিয়েছিলো এবং যথাসময়ে তা ধ্বংসও করে ফেলা হয় হিন্দু বানিয়াদের দ্বারা । সবচেয়ে বিখ্যাত মাদ্রাসা ছিলো মাদ্রাসা-ই রহীমিয়া, যা নগরীর নেতৃস্থানীয় বানিয়া নিলামে কিনে নিয়েছিলো। যার নাম ছিলো রামজি দাস। সে এটিকে ব্যাবহার করে গুদাম হিসেবে।”
    এই ‘মাদরাসা-ই-রহীমিয়া’ হলো সেই মাদরাসা, যা হযরত আবদূর রহীম মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো । এই মাদরাসা থেকেই এসেছিলেন হযরত শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত আবদুল আযীয মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি । সুবহানাল্লাহ ! হযরত ফযলে হক খায়রাবাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিও ছিলেন এই মাদরাসার ছাত্র । অর্থাৎ এই মাদরাসা জ্ঞানবিজ্ঞান চর্চা তো বটেই, তাজদীদের একটি প্রধান কেন্দ্র ছিলো । দিল্লীতে জ্ঞানবিজ্ঞানের এসব অমূল্য নির্দশন ধ্বংস ও লুন্ঠিত হয়েছিলো ব্রিটিশ এবং হিন্দুদের যৌথ ষড়যন্ত্রে ।
    মুসলমান উনাদের আগে অনুধাবন করতে হবে, মুসলিম বিজ্ঞানীগণ উনাদের অবদান চুরি হওয়ার মূল কারণ কী ?
    এর উত্তরে বলতে হয়, মহান আল্লাহপাক তিনি কর্তৃত্ব দেন, আবার তিনিই কর্তৃত্ব কেড়ে নেন ।
    বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি হলো দুনিয়াতে কর্তৃত্ব করার একটা অন্যতম হাতিয়ার ।
    মুসলমানদের উদ্দেশ্য করে মহান আল্লাহপাক এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা জানিয়েছেন যে, কাফির-মুশরিকরা তোমাদের শত্রু, তাদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করোনা ।
    যতোদিন মুসলমান উনারা এই নির্দেশ মুবারক পালন করে এসেছেন, ততোদিন মুসলমানরা বিজ্ঞানের কর্তৃত্ব তথা দুনিয়ার কর্তৃত্ব ধরে রাখতে পেরেছেন । যখনই তারা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীস শরীফ উনাদের এই নির্দেশ মুবারক থেকে সরে এসেছে এবং কাফির-মুশরিকদের সাথে বন্ধুত্ব করেছে, তখনই কাফির-মুশরিকরা মুসলমান উনাদের নিকট থেকে জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার অবদানগুলো চুরি করে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে শুরু করে ।
    আর মুসলমানগণ পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের থেকে সরে আসার ফলে উনাদের উপর যুলুম-নির্যাতন নেমে আসে।
    মুসলমান উনাদেরকে কাফির-মুশরিকদের বন্ধু হিসেবে নয়, বরং মনিব হিসেবে পাঠানো হয়েছে । গোলাম তো বন্ধু হওয়ার যোগ্য নয়, তাকে বন্ধু বানালে সে মনিবের উপড়ে চড়ে বসবেই । এটি অনুধাবন করতে পারলেই মুসলমান উনারা বিজ্ঞানের অবদানসমূহ নিজেদের করে নিতে পারবে । কাফির-মুশরিকদের শত্রুজ্ঞান করতে পারলেই জ্ঞানবিজ্ঞানের উপর মুসলমান উনাদের নিয়ন্ত্রন ফের প্রতিষ্ঠিত হবে, যেমনটি পূর্ববর্তী সময়ের মুসলমানগণ প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন । (ইনশা আল্লাহ চলবে……)
    Next
    This is the most recent post.
    পুরাতন পোস্ট
    • Blogger Comments
    • Facebook Comments

    1 মন্তব্য(গুলি):

    1. Did you realize there's a 12 word sentence you can tell your crush... that will trigger intense emotions of love and impulsive attraction to you deep inside his heart?

      Because hidden in these 12 words is a "secret signal" that triggers a man's impulse to love, admire and protect you with all his heart...

      ====> 12 Words Who Fuel A Man's Desire Instinct

      This impulse is so built-in to a man's mind that it will drive him to try better than before to build your relationship stronger.

      As a matter of fact, triggering this influential impulse is absolutely important to having the best possible relationship with your man that the instance you send your man a "Secret Signal"...

      ...You'll soon notice him open his heart and mind for you in a way he never expressed before and he'll distinguish you as the only woman in the universe who has ever truly fascinated him.

      উত্তরমুছুন

    Item Reviewed: বিজ্ঞানে মুসলমানগণ উনাদের অবদান কিভাবে চুরি হয়েছিলো ? কেনো চুরি হয়েছিলো ? (২ ) Rating: 5 Reviewed By: Unknown
    Scroll to Top