728x90 AdSpace

  • Latest News

    ‘১২ রবিউল আউয়াল নবীজীর (বিছাল শরীফ) ইন্তিকালের দিবস হচ্ছে দুঃখের দিন’ এ কথা বলা কুফরী

    এক শ্রেনীর লোক পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অস্বীকার করে সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দিতে একটা প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে থাকে । তারা বলে থাকে, “নবীজীর ইন্তিকালের দিবস হচ্ছে দুঃখের দিনআর দুঃখের দিনে খুশি প্রকাশ করাটা অন্যায়। নাউযুবিল্লাহ

    বাতিল ফির্কাদের বক্তব্যটা সম্পূর্ণ মিথ্যে এবং কুরআন শরীফ হাদীস শরীফের খেলাপ হওয়ায় সেটা কুফরী মূলক হয়েছে। কেননা নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিলাদত শরীফবিছাল শরীফ ( ইন্তেকাল) পুনরুত্থান প্রত্যকটি রহমতবরকতঈদ বা খুশি প্রকাশের কারন সুবহানাল্লাহ্ যেমনআল্লাহ পাক হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার ব্যাপারে ইরশাদ করেন ,
    وسلم عليه يوم ولد و يوم يموت ويوم يبعث حيا
    অর্থ : উনার প্রতি সালাম ( শান্তি)যেদিন তিনি বিলাদত শরীফ লাভ করেছেন এবং যেদিন তিনি বিছাল শরীফ লাভ করবেন এবং যেদিন তিনি পুনরুত্থিত হবেন !” (সূরা মারইয়াম ১৫)
    অনুরুপ হযরত ইয়াহইয়া আলাইহিস সালাম সম্পর্কে বলা হয়েছে,যেটা তিনি নিজেই বলেন-
    والسلم علي يوم ولدت ويوم اموت ويوم ابعث حيا
    অর্থ : আমার প্রতি সালাম বা শান্তি যেদিন আমি বিলাদত শরীফ লাভ করিযেদিন আমি বিছাল শরীফ লাভ করি যেদিন পুনুরুত্থিত হবো!” (সূরা মারইয়াম ৩৩)
    উপরোক্ত আয়াত শরীফ থেকে আমরা জানতে পারলাম, নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের বিছাল শরীফের দিবসও শান্তির দিন।
    আর হাদীস শরীফে বর্নিত আছে
    عن ابن مسود رضي الله عنه قال قال رسول الله صلي عليه و سلم حياتي خيرلكم و مماتي خير لكم
    অর্থ : আমার হায়াত-বিছাল (ইন্তেকাল) সব অবস্থাই তোমাদের জন্য কল্যাণ বা উত্তম বা খায়ের বরকতের কারন” (দলীল- কানযুল উম্মাল শরীফ : হাদীস ৩১৯০৩, জামিউছ ছগীর ৩৭৭০,শিফা শরীফ ২য় খন্ড ১৯ পৃষ্ঠাউক্ত হাদীস শরীফের সনদ সহীহ।
    উক্ত হাদীস শরীফে নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজেই বলতেছেনউনার বিছাল শরীফ এর দিনও কল্যাণময়।এছাড়া হাদীস শরীফে আরো বর্নিত আছে 
    ان من افضل ايامكم يوم الجمعة فيه خلق ادم وفيه قبض
    অর্থ : তোমাদের দিনগুলোর মধ্যে উত্তম দিন হচ্ছেজুমুয়ার দিনএদিনে আদম আলাইহিস সালাম পয়দা হয়েছেন এবং এদিনেই তিনি বিছাল বা ইন্তেকাল লাভ করেন !” (নাসায়ী শরীফ- কিতাবুল জুমুয়া: হাদীস ১৩৮৫মুসলিম শরীফ- কিতাবুল জুমুয়া: হাদীস ৮৫৫তিরমিযী :হাদীস ৪৯১মুসনাদে আহমদ : ৮৯৫৪হাদীস নম্বর ৮৯ ইবনে মাজাহ : হাদীস ১৭০৫,সুনানে আবু দাউদ – কিতাবুস সালাত: হাদীস ১০৪৭ইবনে খুযায়মা: হাদীস ১৬৩২)
    অতপর এই জুমুয়ার দিন ঈদের দিন ঘোষনা করে ইরশাদ হয় 
    ان هذا يوم جعله الله عيدا
    অর্থ :এ জুমুয়ার দিন হচ্ছে এমন একটি দিনযেদিনকে আল্লাহ পাক ঈদের দিন সাব্যস্ত করেছেন” (ইবনে মাজাহ : হাদীস নম্বর ১১৯৮মুয়াত্তা মালিক- কিতাবুত ত্বহারাত: হাদীস নম্বর ১৪৪বায়হাক্বী : হাদীস ১৩০৩মায়ারিফুল সুনান ওয়াল আছার বায়হাক্বী: হাদীস ১৮০২মুসনাদে শাফেয়ী: হাদীস ২৬৮মুজামুল আওসাত তাবরানী ৩৪৩৩মিশকাত শরীফ)
    উক্ত হাদীস শরীফ থেকে প্রমানিত হলো জুমুয়ার দিন আল্লাহ পাক এর নবী এবং রসূল হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার বিছাল শরীফ এর দিন হওয়ার সত্ত্বেও আল্লাহ পাক স্বয়ং নিজেই সে দিনটিকে খুশির দিন হিসাবে নিদৃষ্ট করে দিয়েছেন এবং স্বয়ং নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজে জুমুয়ার দিনকে ঈদের দিন বলে ঘোষনা দিয়েছেন
    এখন বাতিলপন্থী ওহাবী/ দেওবন্দীরা কি বলবে যেআল্লাহ পাক এবং তার হবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিছাল শরীফের দিন ঈদ পালন করতে বলে অন্যায় করেছেন ?? নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক
    কোনদিনও বলতে পারবে না কারন নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের আগমন এবং বিছাল শরীফ উভয়ই খুশি বা ঈদের দিন ! যারা শোকের বা কষ্টের দিন বলবে তারা কুরআন শরীফ হাদীস শরীফ অস্বীকারকারী এবং মুরতাদের অন্তর্ভুক্ত হবে।
    আর শরীয়তের ফয়সালা হচ্ছে কারো ইন্তেকালের পর তিন দিনের বেশি শোক প্রকাশ করা যাবে না। যেটা হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে-
     عَنْ أُمِّ عَطِيَّةَ، قَالَتْ كُنَّا نُنْهَى أَنْ نُحِدَّ عَلَى مَيِّتٍ فَوْقَ ثَلاَثٍ إِلاَّ عَلَى زَوْجٍ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا
    অর্থ : আমাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছেআমরা যেনো কারো ইন্তেকালে তিন দিন পর আর শোক প্রকাশ না করি । তবে স্বামীর জন্য স্ত্রী চার মাস দশ দিন শোক পালন করতে পারবে’ (দলীল- বুখারী শরীফকিতাবুত তালাকহাদীস ৫৩৪১ কিতাবুল হায়েযহাদীস ৩১৩ মুসলিম শরীফকিতাবুল তালাক হাদীস ১৪৯৩,মুয়াত্তা মালিক শরীফআবু দাউদ শরীফনাসায়ী শরীফ,  তিরমিযী শরীফ,  ইবনে মাজাহ শরীফদারেমী শরীফ,মিশকাত শরীফ)
    সূতরাং দেখা গেলো ইন্তেকালের ৩ দিন পর আর শোক পালন করা  যাবে না। যদি কেউ কারো ইন্তেকালের ৩ দিন পরও শোক পালন করে সেটা শরীয়তের খিলাপ হবে। হাদীস শরীফের বিরোধীতা হবে। আর সবচাইতে বড় কথা হলো হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন হায়াতুন্নবী। তিনি পবিত্র নওজা শরীফে জীবীত আছেন। উনার বিছাল শরীফ উপলক্ষে শোক প্রকাশ স্পষ্ট গোমরাহী ও হায়াতুন্নবী অস্বীকার করার নামান্তর। হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে,
    الأَنْبِيَاءُ أَحْيَاءُ فِيْ قُبُوْرِهِمْ يُصَلُّون
    অর্থ: নবীগণ কবরের মধ্যে জীবিতউনারা সালাত আদায় করেন।’’হাদীসটির সনদ সহীহ (আবূ ইয়ালা :হাদীস ৩৪২৫হায়াতুল আম্বীয়া লিল বাইহাকী ১/৭৩)
    শহীদগণ যহেতু দলীলের ভিত্তিতে জীবতি প্রমাণিতকোরআন শরীফেতার সুষ্পষ্ট র্বণনা আছে, সুতরাং নবীগণ জীবতি থাকবেন। কারণ তারা শহীদগণ হতে উত্তম।’ (ফাতহুল বারী-৬/২৮৮)
    ইমাম কুরতুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন -
    ان الانبياء غيبوا عنا بحيث لا ندركهم وان كانوا موجودين احياء وذالك كالحال فى الـملائكة فانهم موجودون احياء ولا يراهم احد من نوعنا الا من خصه الى الله بكرامته
    অর্থ: হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনারা আমাদের থেকে পর্দা করে যান আমরা উনাদেরকে দেখি না। যদিও উনারা যিন্দা আছেন। উনাদের অবস্থা ফিরিশতা সদৃশ হয়ে যায়। অর্থাৎ হযরত ফিরিশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা যিন্দা আছেন কিন্তু উনাদেরকে কেউ দেখতে পায় না। তবে হাঁ শুধু ঐ ব্যক্তি দেখতে পান যাঁকে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার বিশেষ মেহেরবানী দ্বারা খাছ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! (আলহাভী লিলফাতাওয়া ২য় খ. ৪৫১)
    পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ আছে-
    عن حضرت ابى الدرداء رضى الله تعالى عنه قال ان الله تعالى حرم على الارض ان تأكل اجساد الانبياء فنبى الله حى يرزق
    অর্থ : হযরত আবু দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক  তিনি হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের জিসিম মুবারক যমীনের উপর ভক্ষণ করা হারাম করেছেন। সুতরাং মহান আল্লাহ পাক উনার হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা জীবিত ও রিযিকপ্রাপ্ত। (ইবনে মাজাহ শরীফ ১৬৩৬, সুনানে দারীমী ১৫৭২, মিশকাত শরীফ,জালাউল আফহাম ৬৩ পৃ: , তাযকিরাতুল হুফফাজ ১০৮৫, )
    কিতাবে আরো উল্লেখ করা হয়েছে - 
    ان النبى صلى الله عليه وسلم فى قبره حى
    অর্থ : নিশ্চয়ই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি রওযা মুবারকে জীবিত অবস্থায়ই আছেন। (মিরকাত শরীফ ২য় খন্ড ২২৩ পৃষ্ঠা)
    বিখ্যাত মুহাদ্দিছ আল্লামা ইমাম মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন -
    ليس هنا موت ولافوت بل هو انتقال من حال الى حال وارتحال من دار الى دار وان المعتقد المحقق انه حى يرزق
    অর্থ: এখানে নূরে মুজাসসামহাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য মৃত্যুও নেইনিঃশেষ হওয়াও নেই। বরং এক শান মুবারক হতে অন্য শান মুবারক উনার দিকে স্থানান্তরিত হওয়া এবং এক ঘর হতে অন্য ঘরে হিজরত করা। নিশ্চিত বিশ্বাস এই যে,নূরে মুজাসসামহাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হায়াত মুবারকে (জীবিত) আছেন এবং সম্মানিত রিযিকপ্রাপ্ত হচ্ছেন। (শরহুশ শিফা শরীফ ১ম খ-পৃ. ১৫২মিরকাত শরীফ)

    উক্ত হাদীস শরীফের আলোকে প্রমাণ হলো সকল নবী রসূল আলাইহিমুস সালামগন উনার পবিত্র রওজা শরীফে জীবীত। সকল নবীদের নবী রসূলদের রসূল হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র রওজা শরীফে জীবীত। তাহলে কি করে বলা যেতে পারে ১২ রবিউল আউয়াল শরীফ শোকের দিন। নাউযুবিল্লাহ। যিনি হায়াতুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য কি করে শোক দিবস পালন করা যেতে পারে? যারা  হায়াতুন্নবী মানে না, সহীহ হাদীস শরীফ অস্বীকারকারী তারাই বলে থাকে ১২ ই রবিউল শরীফ শোকের ‍দিন। 
    অতএবশরীয়তের অকাট্য দলীল আদীল্লার দ্বারা প্রমান হলো কারো পক্ষে নবীজী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিছাল শরীফ এর দিন ১২ই রবীউল আওয়াল শরীফকে শোকের দিন হিসাবে সাব্যস্ত করা সম্ভব নয় !!

    যারা শোকের কথা বলবে তারা কুরআন শরীফ এবং হাদীস শরীফ, ইজমা ক্বিয়াস  অস্বীকার করে ঈমানহারা হবে !
    তাই আখেরী রসূলহাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফকে নিয়ামত মনে করে উক্ত দিনকে ঈদ পালন করতে হবে !
    • Blogger Comments
    • Facebook Comments

    0 মন্তব্য(গুলি):

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    Item Reviewed: ‘১২ রবিউল আউয়াল নবীজীর (বিছাল শরীফ) ইন্তিকালের দিবস হচ্ছে দুঃখের দিন’ এ কথা বলা কুফরী Rating: 5 Reviewed By: Baitul Hikmah
    Scroll to Top